চুয়াডাঙ্গা শহরের মুক্তিপাড়া এলাকায় নির্মাণাধীন ভবনের মালিকের কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি ও নির্মাণকাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে এক বিএনপি নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল মঙ্গলবার রাতে ভবনের মালিক ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফা পারভীনের করা মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তার সোহেল রানা (৪৫) চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এবং পৌর এলাকার পুরাতন হাসপাতালপাড়ার বাসিন্দা ব্যবসায়ী মো. জামাত আলীর ছেলে।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খালেদুর রহমান গ্রেপ্তারের খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। ওসি বলেন, সোহেলের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতপরিচয় ছয় থেকে সাতজনকে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
পুলিশ ও মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ী নুরুজ্জামান শহরের মুক্তিপাড়ায় একটি বহুতল ভবন নির্মাণ করছিলেন। গত ৫ আগস্টের পর সোহেল রানাসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল মোটা অঙ্কের চাঁদা দাবি করে। দাবি করা চাঁদার টাকা না দিলে কাজ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দেন তাঁরা। চাঁদার টাকা না পেয়ে সম্প্রতি অভিযুক্ত ব্যক্তিরা নির্মাণাধীন ভবনের কাছ থেকে ৬ গাড়ি ইট (দুই হাজার ইটে এক গাড়ি), ২ মেট্রিক টন রড ও ৩০ ঘনফুট কাঠ জোর করে নিয়ে যান। ভুক্তভোগী নুরুজ্জামান বিষয়টি প্রতিবেশী ও আত্মীয়স্বজনকে জানালে তাঁর পরিবারের ক্ষতি করার হুমকি দেন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। একই চক্র বাড়ির সামনে থেকে ৬ জানুয়ারি আরও এক গাড়ি ইট জোর করে নিয়ে যায়।
এজাহারে বলা হয়েছে, এমন অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে নিরুপায় হয়ে নুরুজ্জামান তাঁর বাড়ি নির্মাণের জন্য কেনা ৬০ গাড়ি ইট অন্যজনের কাছে বিক্রি করে দেন। গতকাল সেসব ইট ট্রাকে করে সরানোর সময় সোহেল রানা ও তাঁর অনুসারীরা আবারও বাধা দেন। তাঁরা বাড়ির মালিককে হুমকি দিয়ে বলেন, ১০ লাখ টাকা চাঁদা না দিলে ইট সরাতে দেবেন না।
এরপর ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী নুরুজ্জামানের স্ত্রী আরিফা পারভীন সদর থানা–পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে দুপুরে শহরের কোর্টপাড়া থেকে সোহেল রানাকে আটক করা হয়। রাতে মামলা করা হলে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা পৌর বিএনপির সভাপতি সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা আছে, বিএনপিতে চাঁদাবাজদের কোনো ঠাঁই নেই। অভিযুক্ত সোহেল রানাসহ তাঁর অনুসারীরা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করেছেন। এ জন্য তাঁদের বহিষ্কারসহ সাংগঠনিক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’