রাজশাহীতে জীবন্ত ঈগল নিয়ে নির্বাচনী প্রচারের অংশ নেওয়ার অভিযোগে স্বতন্ত্র প্রার্থীর এক সমর্থককে কারণ দর্শানোর (শোকজ) নোটিশ দিয়েছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। আজ রোববার রাজশাহী-৫ (পুঠিয়া ও দুর্গাপুর) আসনের নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটির চেয়ারম্যান ও যুগ্ম মহানগর দায়রা জজ লুনা ফেরদৌস তাঁকে এই নোটিশ পাঠান।
আগামী মঙ্গলবার ওই সমর্থককে সশরীর আদালতে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
ওই সমর্থকের নাম কবিরুল ইসলাম। তিনি রাজশাহী-৫ আসনের ঈগল প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা যুবলীগের সাবেক সহসভাপতি ওবায়দুর রহমানের সমর্থক।
এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়ে নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদদু ওরফে দারা। তাঁর নির্বাচনী প্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদ গতকাল শনিবার বিকেলে অনুসন্ধান কমিটিতে জীবন্ত ঈগল নিয়ে নির্বাচনী প্রচারে অংশ নেওয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেন। সেই সঙ্গে স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক কবিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।
নোটিশ সূত্রে জানা যায়, ২৭ ডিসেম্বর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেখা যায়, স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের সমর্থক মো. কবিরুল ইসলাম জীবন্ত ঈগল নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। বিষয়টি নির্বাচনী আচরণবিধির লঙ্ঘন।
এ বিষয়ে জানার জন্য কবিরুল ইসলামকে ফোন করা হলে তাঁর মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া গেছে। তবে ওবায়দুর রহমানের নির্বাচনী প্রতিনিধি ও দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আলমগীর হোসেন বলেন, শোকজের কথা তিনি শুনেছেন।
এ ঘটনায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, কোনো কর্মী-সমর্থক এটা করেছেন কি না, তা তাঁর জানা নেই।
মিছিলে নৌকার প্রার্থীকে ‘খুনি’ বলায় স্বতন্ত্র প্রার্থীর কর্মীকে শোকজ
রাজশাহী-৫ আসনের নৌকার প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতিনিধি ও জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সামাদের অভিযোগের ভিত্তিতে স্বতন্ত্র প্রার্থীর আরেক কর্মীকে শোকজ করেছে নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি। ওই কর্মীর নাম মো. আহসানুল হক। তিনি জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক।
গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দুর্গাপুর পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডে সিংগা পূর্বপাড়া এলাকায় স্বতন্ত্র প্রার্থী ওবায়দুর রহমানের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার পর প্রতিবাদ জানিয়ে তাঁর সমর্থকেরা মিছিল করেন। সেই মিছিলে নৌকা প্রার্থী আবদুল ওয়াদুদকে ‘খুনি’ সম্বোধন করে স্লোগান দেন মো. আহসানুল হক।
নোটিশ সূত্রে জানা যায়, নৌকা প্রার্থীর নির্বাচনী প্রতিনিধি আবদুস সামাদ অভিযোগ করেছেন বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ককটেল বিস্ফোরণের পর স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকেরা মিছিল বের করেন। সেখানে আবদুল ওয়াদুদের বিরুদ্ধে অসত্য, মিথ্যা ও মানহানিকর স্লোগান দিয়ে মিছিল করা হয়। মিছিলে তাঁকে ‘খুনি দারা’, ‘খুনি দারা’ স্লোগান দেওয়া হয়, যা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের শামিল। এ জন্য আগামী মঙ্গলবার বেলা তিনটায় স্বতন্ত্র প্রার্থী কর্মী মো. আহসানুল হককে আদালতে সশরীরে উপস্থিত হয়ে লিখিত ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে আহসানুল হক বলেন, তাঁরা সব সময়ই আবদুল ওয়াদুদকে ‘খুনি’ বলেই সম্বোধন করে থাকেন। তিনি যখন সংসদ সদস্য ছিলেন, তখন তাঁর এলাকায় বাড়ির কাছে বেশ কয়েকটি খুন হয়েছে। এলাকাবাসীসহ তিনি মনে করেন, এটা তাঁর ছত্রছায়ায় হয়েছে। আবদুল ওয়াদুদও তাঁদের নানা ধরনের গালি দিয়ে থাকেন।