ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় প্রতীক বরাদ্দের আগে প্রচারণা চালানোর অভিযোগে চেয়ারম্যান পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করা যুবদল নেতা মো. আল জাবেরকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। আজ শুক্রবার সন্ধ্যায় রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. আবদুল্লাহ আল মামুন তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেন।
নোটিশে আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণা চালানোয় প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে কেন তাঁর বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা আগামী রোববার সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে সশরীর রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা মো. আবদুল্লাহ আল মামুন নোটিশের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন।
আল জাবের উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি। গতকাল বৃহস্পতিবার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিনে তিনিসহ বিজয়নগরে চেয়ারম্যান পদে ছয়জন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তফসিল অনুযায়ী, আগামী রোববার মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাই, ১৯ মে প্রত্যাহারের শেষ দিন, ২০ মে প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে। চতুর্থ ধাপে আগামী ৫ জুন বিজয়নগরে ভোট হবে।
কারণ দর্শানোর নোটিশে উল্লেখ করা হয়, আজ (শুক্রবার) বিকেল চারটায় জনসভার আয়োজন করেন আল জাবের। তিনি এলাকায় মিছিল ও শোডাউন করেন। এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে আছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা একাধিকবার ফোন করে প্রচার বন্ধ করতে বললেও তিনি করেননি, যা উপজেলা পরিষদ (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬–এর বিধি ৫–এর পরিপন্থী। তাঁর বিরুদ্ধে উপজেলা পরিষদ (নির্বাচনী আচরণ) বিধিমালা ২০১৬–এর বিধি ৩৩ অনুযায়ী প্রার্থিতা বাতিলের বিষয়ে কেন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, তা রোববার সকাল সাড়ে ৯টার মধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে হাজির হয়ে লিখিতভাবে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন প্রথম আলোকে বলেন, আচরণবিধি লঙ্ঘন করে প্রচারণার অংশ হিসেবে সভা, সমাবেশ, মিছিল ও শোডাউন করেছেন ওই প্রার্থী। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা ফোন করে প্রচারণা বন্ধের নির্দেশ দিলেও তিনি করেননি। এ জন্য তাঁকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে।
আচরণবিধি অনুযায়ী, ২০ মে চূড়ান্ত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দের আগে কোনো প্রার্থী প্রচারণা চালাতে পারবেন না। কিন্তু চেয়ারম্যান প্রার্থী যুবদল নেতা মো. আল জাবের সভা, সমাবেশ ও মিছিলের মাধ্যমে আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছেন।
নোটিশ পাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে আল জাবের প্রথম আলোকে বলেন, তিনি নির্বাচনের আচরণবিধি সম্পর্কে ভালোভাবে জানতেন না। বিষয়টি জানার পর তিনি প্রচারণা বন্ধ করে দেন।
বিজয়নগরে আল জাবের ছাড়া আরও পাঁচজন মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। তাঁরা হলেন আওয়ামী লীগের সমর্থক বর্তমান চেয়ারম্যান নাছিমা মুকাই আলী, উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কাজী মো. রফিকুল ইসলাম, নাছিমা মুকাইয়ের দেবর মোশাহেদ হোসেন, ব্যক্তিগত সহকারী হারুনুর রশিদ এবং যুবদল নেতার ব্যক্তিগত সহকারী মুজিবুর রহমান। তাঁদের মধ্যে শেষের তিনজন ‘ডামি’ প্রার্থী।