যশোরে জামায়াত কর্মী আমিনুল হত্যা মামলায় ৫ জন কারাগারে, আগ্নেয়াস্ত্র ও চাকু উদ্ধার

কারাগার
প্রতীকী ছবি

যশোর শহরের খড়কি এলাকায় জামায়াতে ইসলামীর কর্মী আমিনুল ইসলাম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে ৫ তরুণকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জেলা ডিবি পুলিশ গত দুই দিন খোলাডাঙা গাজীরহাট বাজার এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাঁদের আটক করে।

আজ বৃহস্পতিবার আমিনুল হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র ও চাকু উদ্ধার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।

গ্রেপ্তার তরুণেরা হলেন খুলনার তেরখাদা উপজেলার বারাসাত এলাকার আছাবুর রহমান হাসিবের ছেলে সাদমান রহমান ওরফে সাকিন (১৯), যশোর শহরের খোলাডাঙ্গা এলাকার আমজাদ হোসেনের ছেলে আল-আমিন হোসেন (১৮), একই এলাকার লুৎফর রহমানের ছেলে রায়হান আহমেদ (২১), খড়কি সার্কিট হাউসপাড়ার বাবলু মোড়লের ছেলে আবদুর রহমান ওরফে সাগর (২১) এবং শহরের খোলাডাঙ্গা এলাকার ইসমাইল হোসেনের ছেলে রিয়াদ হাসান (২১)।

আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ ব্রিফিংয়ে যশোর ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মফিজুল ইসলাম জানান, ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় জামায়াত নেতা আমিনুল ইসলাম ওরফে সজলকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। এ ঘটনায় তদন্ত শুরু করে ডিবি পুলিশ। তদন্তের অংশ হিসেবে শহরের খোলাডাঙ্গা গাজীরহাট বাজার থেকে প্রথমে সন্দেহভাজন দুই আসামি সাদমান রহমান ও আল-আমিন হোসেনকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেন এবং আরও ৩ জনের নাম বলেন। একই সঙ্গে হত্যার সঙ্গে আরও কিছু কিশোর গ্যাং সদস্যের সম্পৃক্ততার তথ্য দেন তাঁরা।

এসআই মফিজুল জানান, প্রথম আটক দুই ব্যক্তির কাছ থেকে একটি ভিডিও ফুটেজ উদ্ধার করা হয়। যাতে দেখা যায়, সাদমান ও তাঁর সহযোগীরা মাদক সেবনের আসরে চাকু ও রিভলবার নিয়ে প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। এই ভিডিওর সূত্র ধরে পুলিশ অভিযান চালিয়ে পরে রায়হান আহমেদ, আব্দুর রহমান ও রিয়াদ হাসান নামের আরও তিনজনকে আটক করে গ্রেপ্তার দেখায়।

গ্রেপ্তার তরুণদের বরাত দিয়ে এসআই মফিজুল বলেন, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামিরা জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে আমিনুলকে খুন করেছেন তাঁরা। নিহত আমিনুল কিছুদিন আগে ফখরুল ইসলাম ও তাঁর স্বজনদের পথরোধ করে একটি ব্যাগ তল্লাশি করেছিলেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁরা আমিনুলকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। ৪ নভেম্বর সন্ধ্যায় আমিনুল বাড়ি থেকে বের হলে পেছন থেকে আক্রমণ করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ২১টি ছুরিকাঘাত করে তাঁকে হত্যা করা হয়।

গ্রেপ্তার তরুণদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল দিবাগত রাত রাত দেড়টার দিকে রায়হান আহমেদের বাড়ির সিঁড়ির নিচ থেকে দুটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এরপর হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি বার্মিজ চাকুও উদ্ধার হয়।

এই হত্যাকাণ্ডের তদন্তে ডিবি পুলিশ আধুনিক প্রযুক্তি ও তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহারকে সফলভাবে কাজে লাগিয়ে অপরাধীদের শনাক্ত এবং গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে বলেও সংবাদ ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।