কক্সবাজারের টেকনাফে এবার ছয় রোহিঙ্গাকে কাজ দেওয়ার কথা বলে অপহরণ করা হয়েছে। গতকাল শুক্রবার রাতে এ ঘটনা ঘটে। অপহৃত রোহিঙ্গাদের পরিবারের কাছে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা মুক্তিপণও দাবি করা হচ্ছে। আজ শনিবার বেলা আড়াইটার দিকে প্রথম আলোকে বিষয়টি জানিয়েছেন ১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের (এপিবিএন) উপ-অধিনায়ক পুলিশ সুপার মো. জামাল পাশা।
অপহরণের শিকার রোহিঙ্গারা হলেন টেকনাফের হোয়াইক্যং ইউনিয়নের চাকমারকুল ২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে বি-৭ ব্লকের বাসিন্দা আমির হাকিমের ছেলে মো. ফরোয়াজ (৩৮) ও মো. জোহার (৩০), মোহাম্মদ ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ নূর (৩৫), আবুল হোসেনের ছেলে নুরুল হক (৩০), ইউসুফ আলীর ছেলে জাহিদ হোসেন (৩৫) ও একই শিবিরের সি-১ ব্লকের বাসিন্দা আবদুস সালামের ছেলে মো. ইদ্রিস (১৯)।
হোয়াইক্যং চাকমারকূল-২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এপিবিএন কর্মকর্তা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যার দিকে রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবির থেকে চোরাই পথে স্থানীয় মো. বেলাল ওই ছয় রোহিঙ্গাকে উলুবনিয়া কাজের কথা বলে বের করে নিয়ে যান। এরপর তাঁদের এক জায়গায় নিয়ে রাত সাড়ে ১২টার পর পরিবারের কাছে জনপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৩ লাখ মুক্তিপণ দাবি করেন।
অপহৃত ছয় রোহিঙ্গার পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, অপহৃত মোহাম্মদ নুরের মুঠোফোন থেকে অপহৃত জোহারের স্ত্রীর কাছে ফোন করে জনপ্রতি ৫০ হাজার মুক্তিপণ দাবি করেছেন সন্ত্রাসীরা। টাকা দিতে না পারলে অপহৃতদের মেরে ফেলার হুমকিও দেওয়া হয়েছে।
অপহৃত জোহার ও ফরোয়াজের বাবা আমির হাকিম বলেন, ‘আমাদের শিবিরের পাশের বেলাল নামের এক স্থানীয় যুবক ওই ছয়জনকে মাটির কাটার কথা বলে হ্নীলায় পাঠিয়েছেন। তাঁরা ঘর থেকে বাইরে যাওয়ার পর এক থেকে দুই ঘণ্টা পর তাঁদের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে রাতে মুক্তিপণ দাবি করে জোহারের স্ত্রী শফিকা বেগমের কাছে ফোন আসে।
শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার কার্যালয়ের কর্মকর্তা ও চাকমারকূল-২১ নম্বর রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরের ইনচার্জ মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘ছয়জন রোহিঙ্গা নাগরিককে অপহরণের বিষয়টি শুনেছি এবং বিষয়টি আমরা এপিবিএনকে জানিয়েছি।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন,এ ছয়জন রোহিঙ্গা নাগরিককে স্থানীয় এক ব্যক্তি শ্রমিক হিসেবে কাজ দেওয়ার কথা বলে অজ্ঞাতস্থানে নিয়ে জিম্মি করে রেখেছেন। তাঁদের উদ্ধার করতে জেলা পুলিশের সমন্বয়ে এপিবিএন তৎপরতা চালাচ্ছে। তবে যে মুঠোফোন থেকে কল করে মুক্তিপণ দাবি করেছিল, সেটি এখন বন্ধ পাওয়া যাচ্ছে। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এলাকা শনাক্তের কাজ চলছে।