সৌদি আরব থেকে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি বিমানে ২৪ জুলাই সকাল সাতটায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান জাহিদুল ইসলাম (২৫)। স্বজনেরা তাঁকে আনতে বিমানবন্দরে অপেক্ষা করছিলেন। বিমানবন্দরে লাগেজ পাওয়া গেলেও তাঁর সন্ধান পাননি তাঁরা। এর পর থেকে ওই প্রবাসী যুবক নিখোঁজ। এ ঘটনায় গতকাল মঙ্গলবার জাহিদুলের চাচা এনামুল হক বিমানবন্দর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।
জাহিদুল ইসলামের বাড়ি টাঙ্গাইলের সখীপুর উপজেলার বহুরিয়া ইউনিয়নের করটিয়া পাড়া গ্রামে। তাঁর বাবার নাম মৃত জালাল মিয়া। জাহিদুলের ছোট ভাই বর্তমানে সৌদি আরব থাকেন। জাহিদুল অবিবাহিত। তাঁর গ্রামের বাড়িতে শুধু মা আছেন। দুই দিনেও তাঁর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন মা ও স্বজনেরা।
জিডিতে উল্লেখ করা হয়, ২৪ জুলাই সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে সৌদি এয়ারলাইনসের একটি বিমানে সৌদি আরব থেকে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান জাহিদুল। বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা শেষ করে তাঁর বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল। এ জন্য তাঁর চাচা এনামুল হক গাড়ি নিয়ে ভোরে বিমানবন্দরে যান। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষার পর বিমানবন্দরের একটি সূত্রের মাধ্যমে জানতে পারেন, বিমানবন্দরের আনুষ্ঠানিকতা শেষে ইমিগ্রেশন থেকে বের হয়ে লাগেজ রেখে শুধু একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে ১ নম্বর গেট দিয়ে বের হয়েছেন জাহিদুল। এর পর থেকে তিনি নিখোঁজ।
দুই দিনেও তাঁর কোনো সন্ধান না পাওয়ায় উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় দিন পার করছেন মা ও স্বজনেরা।
আজ বুধবার দুপুরে নিখোঁজ জাহিদুলের মা বেগম আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘জাহিদুলের বয়স যখন পাঁচ বছর, তখন তার বাবা মারা যান। দুই ছেলেকে অনেক কষ্ট করে বড় করেছি। ছয় বছর আগে আমার ছেলে সৌদি আরব যায়। দেশে এসেই বিয়ে করার কথা ছিল তার। তার পছন্দের পাত্রীও দেখে রাখা হয়েছে।’ মায়ের ধারণা, জাহিদুল কোনো প্রতারক চক্রের ফাঁদে পড়েছেন। তাঁরা গাজীপুর ও রাজধানী ঢাকার সব হাসপাতালেও খোঁজ নিয়েছেন বলে জানান।
জাহিদুলের চাচা এনামুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিমানবন্দরে আসার পর তাঁর সঙ্গে একাধিকবার কথা হয়েছে জাহিদুলের। সর্বশেষ সকাল আটটার দিকে জাহিদুল ইমো অ্যাপে ভয়েস রেকর্ডে বলেন, ‘আমার মাত্র ১০ মিনিট সময় লাগবে। তুমি ২ নম্বর গেটে আমার জন্য অপেক্ষা করো।’ পরে ভেতরে লাগেজ পাওয়া গেলেও জাহিদুলের খোঁজ আর পাওয়া যায়নি। নিখোঁজের পরের দিন চাচা এনামুল হক বাদী হয়ে বিমানবন্দর থানায় জিডি করেন। এ ঘটনায় তাঁরা দিশাহারা। জাহিদুলের সন্ধানে পুলিশ প্রশাসনের সর্বাত্মক সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি।
জিডির তদন্ত করছেন বিমানবন্দর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আফতাব উদ্দিন। তিনি আজ বিকেলে বলেন, ‘নিখোঁজ ওই ব্যক্তির মুঠোফোন নেই। থাকলে তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁর সন্ধান চালানো সহজ হতো। তিনি বিমানবন্দর থেকে বের হয়ে এসে কোন গাড়িতে উঠেছেন, আমরা সিসিটিভি ক্যামেরা ফুটেজ দেখে তা বের করার চেষ্টা করছি।’