ভালো ডিমের দাম বেশি, ভাঙা ডিমের খোঁজ করছেন নিম্নবিত্তরা

ডিম
ছবি: এএফপি

সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায় ব্রয়লার মুরগির ডিমের দাম বেড়ে যাওয়ায় স্বল্প আয়ের মানুষের কাছে ভাঙা ডিমের চাহিদা বেড়েছে। এ সুযোগে ভাঙা ডিমের দামও বেড়ে গেছে। আজ শুক্রবার সকালে উপজেলা সদরের অন্যতম বড় বাজার ধানগড়া বাজার ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে।

ধানগড়া বাজারের পুরোনো চৌরাস্তায় সেন্টার পয়েন্টের সামনে দীর্ঘদিন ধরে ডিম বিক্রি করেন মো. রঞ্জু সরকার। তিনি বলেন, কিছুদিন আগেও ডিমের হালি ছিল ৩০-৩২ টাকা। দাম বাড়তে বাড়তে হলো ৪২ টাকা। গত সপ্তাহের শুরুতে একলাফে ৫০ টাকা হালি হয়েছে। দুই দিন পর থেকে দাম কিছুটা কমলেও ৪৪ টাকার নিচে বিক্রি করা যাচ্ছে না। দাম বাড়ায় ডিমের বিক্রি কমে গেছে। আগে দিনে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার ডিম বিক্রি করতেন তিনি। বর্তমানে তা কমে দেড় হাজারে ঠেকেছে।

তবে হঠাৎ ভাঙা ডিমের চাহিদা বেড়েছে বলে জানালেন রঞ্জু। তিনি বলেন, আগে সারা দিন বেচাকেনা শেষে ভাঙা ডিম বাড়িতে নিয়ে যেতেন। হঠাৎ দু-একজন কম দামে ভাঙা ডিম কিনতেন। তবে কয়েক দিন ধরে অনেকেই এসে ভাঙা ডিমের খোঁজ করছেন। ভাঙা ডিম না পেলে পরে রেখে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করছেন অনেকে। প্রতিটি ভাঙা ডিম আগে পাঁচ টাকায় বিক্রি হলেও এখন সাত থেকে আট টাকায় বিক্রি করেন বলে জানান তিনি।

ওই দোকানে ভাঙা ডিম কিনতে এসেছেন মধ্যবয়সী এক নারী। পরিচয় প্রকাশ না করে তিনি বলেন, ‘মেয়েটা স্কুলে পড়ে। ভাতের সঙ্গে ডিম হলে মেয়ের অন্য কিছুই লাগে না। ভালো ডিমের দাম বেশি, তাই ভাঙা ডিম কিনছি।’

ধানগড়া বাজারের তিনজন ডিম ব্যবসায়ীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাধারণত ডিম পরিবহনের সময় কিছু ডিম ভেঙে যায়। এসব ভাঙা ডিম তাঁরা আলাদা করে রাখেন। তবে কিছুদিন আগেও এসব ডিমের তেমন চাহিদা ছিল না। দিনের বেচাকেনা শেষে অধিকাংশ ডিম ফেলে দিতেন বিক্রেতারা। তবে সম্প্রতি মুরগি ও হাঁসের ডিমের দাম একলাফে অনেক বেড়েছে। ফলে নিম্ন আয়ের ক্রেতাদের কাছে ভাঙা ডিমের চাহিদা বেড়েছে। তবে ক্রেতারা অভিযোগ করছেন, এ সুযোগে বিক্রেতারা ভাঙা ডিমের দরদামও বাড়িয়ে দিয়েছেন।

ওই বাজারে ভাঙা ডিম কিনতে আসা এক দিনমজুর বলেন, আগে কখনো ভাঙা ডিম কিনতে হয়নি। আগে যেই দামে ভালো ডিম কিনতেন, এখন সেই দামেই ভাঙা ডিম কিনতে হচ্ছে।
ডিম ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আমরাও বুঝতে পারছি না, হঠাৎ এভাবে ডিমের দাম বাড়ল কেন! দাম বাড়ায় ডিম বিক্রি অনেক কমে গেছে। অনেকেই আবার এসে ভাঙা ডিমের খোঁজ করছেন।’

স্থানীয় একটি কলেজের শিক্ষক তাপস কুমার পাল বলেন, সাধারণ মানুষের পুষ্টির বড় অংশ আসে মুরগির ডিম থেকে। সেটির দামও এখন অনেক। ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের দুর্ভোগ আরও বেড়ে গেছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ধানগড়াসহ উপজেলার অন্যান্য বাজারে বর্তমানে ব্রয়লার মুরগির ডিম ৪৪ থেকে ৪৫ টাকা, হাঁসের ডিম ৫৫ থেকে ৬০ টাকা ও সোনালি মুরগির ডিম ৬০ টাকা হালি দরে বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলকভাবে দাম একটু কম হওয়ায় ব্রয়লার মুরগির ডিমের বিক্রি বেশি বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।