ফুটবল খেলায় আর্জেন্টিনা দলের সমর্থক তাম্মাত বিল খয়ের (২৩)। দেশটির তারকা ফুটবলার লিওনেল মেসির ভক্ত তিনি। কাতার বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে আর্জেন্টিনা। পুরো টুর্নামেন্টে নৈপুণ্য দেখিয়ে গোল্ডেন বল জিতেছেন মেসি। এরই মধ্যে ক্যারিয়ারের ১০০৩তম ম্যাচ খেলে ফেলেছেন সর্বকালের অন্যতম সেরা এ ফুটবলার।
আর্জেন্টিনা ও মেসিতে মুগ্ধ তাম্মাত তাই চান প্রিয় খেলোয়াড়ের এসব অর্জনকে স্মরণীয় করে রাখতে। এ জন্য সাইকেল চালিয়ে ১ হাজার ৩ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে বের হয়ে পড়েছেন এই তরুণ। এ সাইকেল-যাত্রা তিনি উৎসর্গ করেছেন লিওনেল মেসিকে।
গত শনিবার সকাল নয়টায় কক্সবাজারের টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনয়নের শাহপরীর দ্বীপ জেটিঘাট থেকে সাইকেল চালিয়ে যাত্রা শুরু করেন তাম্মাত বিল খয়ের। প্রথম দিন শাহপরীর দ্বীপ, টেকনাফ, কক্সবাজার হয়ে চকরিয়া পর্যন্ত ১৫৯ দশমিক ৯ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন।
দ্বিতীয় দিন চকরিয়া, বাঁশখালী, আনোয়ারা হয়ে চট্টগ্রাম পর্যন্ত ৮৬ দশমিক ৪ কিলোমিটার এবং তৃতীয় দিন পাড়ি দেন চট্টগ্রাম, ফেনী, কুমিল্লা হয়ে দাউদকান্দি পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার পথ।
চতুর্থ দিন দাউদকান্দি থেকে ঢাকা পর্যন্ত ৫০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন। আজ বুধবার বিকেলে তিনি টাঙ্গাইলে পৌঁছান।
এ পর্যন্ত ৫৮১ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়েছেন জানিয়ে আজ সন্ধ্যায় তাম্মাত বিল খয়ের বলেন, কাল বৃহস্পতিবার সকালে জামালপুরের উদ্দেশে রওনা দেবেন। এরপর একে একে গাইবান্ধা, রংপুর, পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া হয়ে আগামী ১ জানুয়ারি বাংলাবান্ধা জিরো পয়েন্ট পৌঁছাবেন।
তাম্মাত বিল খয়েরের বাড়ি গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া। জন্ম চট্টগ্রামে। বাবা পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নেয়ামত আলী সিকদার ও মা গৃহিণী নুর জাহান বেগম থাকেন চট্টগ্রামে।
ছয় ভাই ও এক বোনের মধ্যে তাম্মাত সবার ছোট। তিনি বাংলাদেশ পুলিশের সাইক্লিং দলের চুক্তিভিত্তিক একজন খেলোয়াড়।
এর আগে তাম্মাত ২০১৯ সালের ২৫ অক্টোবর চট্টগ্রাম থেকে সাইকেলে ৬৪ জেলা ভ্রমণে বের হন। ১৫ দিনের ভ্রমণে সাইকেলে পাড়ি দেন ৩ হাজার ৯৭০ কিলোমিটার। তাম্মাত প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওইবার ১৫ দিনের লক্ষ্য নিয়ে বের হয়েছিলাম। অনেক প্রতিকূলতা ছিল। এরপরও ঠিক সময়ে লক্ষ্য পূরণ করেছিলাম। এটা অনেক আনন্দের।’
ছোটবেলা থেকেই সাইকেল চালানোর শখ তাম্মাতের। এর সঙ্গে যোগ হয় ভ্রমণের নেশা। একসময় সাইকেলে চড়ে ভ্রমণের ইচ্ছা পেয়ে বসে তাঁকে। ২০১৭ সালের এপ্রিলে ২৫ দিনে সারা দেশ ভ্রমণ করেছিলেন।
বিরতি দিয়ে ২০১৯ সালের আবারও সাইকেলের প্যাডেলে পা রাখেন। তবে সেবার ভালো-মন্দ মিলিয়ে নানা অভিজ্ঞতা ছিল তাম্মাতের ঝুলিতে। তখন প্রতিটি জেলা সদরের সার্কিট হাউসের সামনে গিয়ে ফেসবুকে লাইভে আসতেন তিনি।
উদ্যমী এ তরুণ প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ যাত্রাটা প্রিয় মেসিকে স্মরণে রাখার জন্য বের হয়েছি। পথে পথে অনেক মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। প্রিয় খেলোয়াড় মেসির সমর্থকেরা উৎসাহ দিয়েছেন।’ যাত্রাপথে ডাকবাংলোগুলোয় রাত্রিযাপনের সুযোগ পেলে সুবিধা হতো বলেও জানান তাম্মাত।