বরিশালের উজিরপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এক প্রার্থীর সমর্থনে উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে আওয়ামী লীগের এক নেতা অন্য প্রার্থীদের হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মো. ইউসুফ হোসেন নামের উপজেলা আওয়ামী লীগের এই সহসভাপতি উজিরপুরের বামরাইল ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পদেও আছেন।
গতকাল শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের আয়োজনে উঠান বৈঠকে অংশ নিয়ে মো. ইউসুফ হোসেন এই বক্তব্য দেন। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সংসদ সদস্য আবুল হাসনাত আবদুল্লাহর নাম উল্লেখ করে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের উদ্দেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘ভাইর দোয়া নিয়া নাইম্মা গেছি, ধরমু ঘেডি-দিমু মাডি, কিসের...কান্দাকাটি।’
এই বক্তব্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে অন্যান্য চেয়ারম্যান প্রার্থী ও তাঁদের সমর্থকেরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ দেননি।
উপজেলা নির্বাচনের চেয়ারম্যান প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় উপকমিটির নেতা সুখেন্দ্র বৈদ্য বলেন, ‘বামরাইল ইউনিয়নের চেয়ারম্যান যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দিয়েছেন, তা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন। এ বক্তব্য দেওয়ার জন্য আমি নির্বাচন কমিশনের কাছে তাঁর বিচার চাই। বিএনপির এজেন্ট ও বিনা ভোটের ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ সুন্দর, শান্তিপূর্ণ ও সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ নষ্ট করতে পাঁয়তারা করছেন।’
উজিরপুর উপজেলা পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান, নির্বাচনে একই পদের প্রার্থী ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল মজিদ সিকদার বলেন, ‘আমরা প্রার্থীরা প্রত্যেকেই উপজেলা চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করেছি। কেউ কেউ ইউপি চেয়ারম্যানের দায়িত্বও পালন করছি। কাজেই আমাদের বক্তব্য দেওয়ার সময় দায়িত্বশীল হওয়া উচিত। সুষ্ঠু নির্বাচনের স্বার্থে উত্তেজনাপূর্ণ বক্তব্য থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।’
ইউসুফ হোসেন আরেক চেয়ারম্যান প্রার্থী হাফিজুর রহমানের উঠান বৈঠকে এই বক্তব্য দিয়েছিলেন। এ বিষয়ে কথা বলার জন্য তাঁকে ফোন করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি চেয়ারম্যান ইউসুফ হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি ভিডিও দেখিনি, তবে ডিজিটাল যুগে কেউ আমার বক্তব্য এডিট করে আমাকে হেয় করতে ফেসবুকে ছাড়তে পারেন। আমি ভিডিওটি দেখে বিস্তারিত বলতে পারব।’
উজিরপুর উপজেলা নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ইউসুফ হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত কোনো অভিযোগ আসেনি। আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পেলে তদন্তসাপেক্ষ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।