মেঘনায় জলদস্যুদের হামলায় গুলিবিদ্ধ আরেক জেলের মৃত্যু
নোয়াখালীর মেঘনা নদীতে ইলিশ মাছের খোপ দখলকে কেন্দ্র করে জলদস্যুদের গোলাগুলির ঘটনায় মো. ইসমাইল (৩০) নামের গুলিবিদ্ধ আরও এক জেলে মারা গেছেন। আজ শনিবার সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। সকালে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ঢাকা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছিল।
গুলিবিদ্ধ ইসমাইলের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে তাঁর সঙ্গে থাকা ভগ্নিপতি মো. জাহাঙ্গীর আলম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পর দুপুরের দিকে ইসমাইলের শরীরে অস্ত্রোপচার করা হয়। অস্ত্রোপচারের পর তাঁর শারীরিক অবস্থা ভালো ছিল। কিন্তু বিকেলের দিকে হঠাৎ তাঁর অবস্থার অবনতি ঘটে। সন্ধ্যা পৌনে সাতটার দিকে তিনি মারা যান।
গত বুধবার বিকেলে মেঘনা নদীর স্বর্ণদ্বীপের পশ্চিমে সন্দ্বীপ চ্যানেলের কাছে ইলিশ মাছের খোপে মাছ ধরার সময় জেলেদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গুলিবিদ্ধ তিনজনের মৃত্যু হলো। আজ মারা যাওয়া ইসমাইলের বাড়ি সুবর্ণচর উপজেলার মোহাম্মদপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের চর আলাউদ্দিন গ্রামে। নিহত অন্য দুজন হলেন সুবর্ণচরের পূর্ব চরবাটা ইউনিয়নের পূর্ব চর মজিদ গ্রামের আবদুর রহমান (৩৩) এবং একই গ্রামের দেলোয়ার হোসেন ওরফে রাজু (১৬)।
হামলার শিকার জেলেরা অভিযোগ করেন, সুবর্ণচর উপজেলার ভূঁইয়ারহাট এলাকার আলাউদ্দিনের দখল করা ইলিশ মাছের খোপে মাছ ধরতে যান মাইন উদ্দিন মাঝি, অলি মাঝিসহ এক দল জেলে। প্রায় ১০ বছর ধরে খোপটি আলাউদ্দিনের দখলে আছে। ওই খোপ দখলের চেষ্টা করে জলদস্যু কেফায়েত বাহিনী। গত বুধবার বিকেলে কেফায়েত বাহিনী খোপ দখল করতে জেলেদের জাল কেটে দেয়। খবর পেয়ে মাছ ধরার দুটি ট্রলার নিয়ে সেখানে যান মাইন উদ্দিন মাঝি, অলি মাঝিসহ এক দল জেলে। তখন কেফায়েত বাহিনী জেলেদের ওপর অতর্কিতে হামলা ও গুলি চালায়। এতে ছয়জন গুলিবিদ্ধসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হন।
সুবর্ণচরের চর জব্বর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হুমায়ুন কবির প্রথম আলোকে বলেন, সন্দ্বীপ চ্যানেলের কাছে ইলিশ মাছের খোপে মাছ ধরার সময় জেলেদের ওপর হামলার ঘটনায় গুলিবিদ্ধ ইসমাইল নামের আরও এক জেলে ঢাকায় মারা যাওয়ার খবর তিনি শুনেছেন। এ নিয়ে তিনজন মারা গেলেন। গোলাগুলি ও নিহতের ঘটনায় কোস্টগার্ড বাদী হয়ে সন্দ্বীপ থানায় একটি মামলা করেছে। তবে মামলায় কাউকে আসামি করা হয়নি। নিহত ব্যক্তিদের পরিবার কোনো আইনগত সহায়তা চাইলে তা করা হবে বলে তিনি জানান।