দেশে আগামীকাল বৃহস্পতিবার পবিত্র ঈদুল ফিতর উদ্যাপিত হবে। এবারও দেশে ঈদুল ফিতরের বৃহত্তম জামাত অনুষ্ঠিত হবে কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহে। ঐতিহ্য ও রেওয়াজ অনুযায়ী বন্দুকের ফাঁকা গুলিতে জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ১০টায়। এই ঈদগাহে ১৯৭তম ঈদুল ফিতরের জামাতে ইমামতি করবেন মাওলানা ফরীদ উদ্দীন মাসউদ।
এরই মধ্যে শোলাকিয়া ঈদগার সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। দেশ-বিদেশের নানা প্রান্তের মুসল্লিরা এখানে নামাজে অংশ নিতে আসেন। তাই বাড়তি নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে প্রশাসনের পক্ষ থেকে। শোলাকিয়া ঈদগাহ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবুল কালাম আজাদ সবাইকে ঈদে আমন্ত্রণ জানিয়ে নিরাপত্তার স্বার্থে ঈদগাহ মাঠে শুধু পাতলা জায়নামাজ নিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন।
ঈদের নামাজ আদায় শেষে মুসল্লিরা নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন, সে বিষয়ে প্রশাসন থেকে সার্বিক ব্যবস্থা নেওয়ার পাশাপাশি মুসল্লিদের প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা ও যাতায়াতের সুবিধার জন্য দুটি বিশেষ ট্রেনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ বলেন, এ মাঠকে উদ্দেশ্য করে ২০১৬ সালে ভয়াবহ জঙ্গি হামলার বিষয়টি মাথায় রেখে চার স্তরের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। সহস্রাধিক পুলিশের পাশাপাশি র্যাব, এপিবিএন ও কয়েক প্লাটুন বিজিবি সদস্য মোতায়েন থাকবে। ইতিমধ্যে মাঠের নিরাপত্তা পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। এ ছাড়া মাঠ ও আশপাশের বাসাবাড়িতে এবং শহরের আবাসিক হোটেলে যাতে নতুন কেউ উঠতে পারেন, এ বিষয়ে সবাইকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া ময়মনসিংহ কেন্দ্রীয় আঞ্জুমান ঈদগাহ মাঠে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল আটটায়, দ্বিতীয় জামাত পৌনে নয়টায়। ময়মনসিংহের আকুয়া মার্কাজ মসজিদে ঈদের জামাত সকাল সোয়া সাতটায়। ময়মনসিংহের বড় মসজিদে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত আটটায় এবং দ্বিতীয় জামাত সাড়ে আটটায়। বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সাড়ে আটটায়।
নরসিংদী জেলার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সদর উপজেলার চিনিশপুর ইউনিয়নের গাবতলী এলাকার জামেয়া কাসেমিয়া কামিল মাদ্রাসায় সকাল সাড়ে আটটায়। এ ছাড়া জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের কালেক্টরেট ঈদগাহ মাঠে দুটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম জামাত সকাল সাড়ে আটটায়, দ্বিতীয় জামাত নয়টায়।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ঈদগাহ মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। তবে প্রাকৃতিক দুর্যোগ দেখা দিলে একই সকাল সাড়ে আটটায় জেলা জামে মসজিদে (বড় মসজিদ) ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জেলা শহরের টেংকেরপাড়ের জামে মসজিদ মাঠে সকাল সাড়ে আটটায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জেলা পুলিশ লাইনসের পশ্চিমে অবস্থিত জামিয়া দারুল আকরাম আল ইসলামিয়া মাদ্রাসায় ঈদের জামাত সকাল আটটায় অনুষ্ঠিত হবে।
এ ছাড়া নেত্রকোনায় সকাল নয়টায় শহরের মোক্তারপাড়া মাঠে প্রথম জামায়াত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল ১০টায় মোক্তারপাড়া এলাকায় বড় মসজিদে অনুষ্ঠিত হবে। শেরপুর পৌর ঈদগাহ মাঠে সকাল নয়টায় ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে সকাল সাড়ে আটটায় সদর উপজেলা মডেল মসজিদে প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। জামালপুর পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ মাঠের সবচেয়ে বড় জামাত সকাল আটটায় এবং জেলা মডেল মসজিদের জামাত সকাল নয়টায় অনুষ্ঠিত হবে।
সিলেট মহানগর এলাকায় পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ৪৩০টি স্থানে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে ৮৩টি ঈদগাহ ও মাঠে এবং ৩৪৭টি মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সিলেটের শাহি ঈদগাহ মাঠে ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত ঈদের দিন সকাল আটটায়।
এ ছাড়া সিলেটের বন্দরবাজার এলাকার কুদরত উল্লাহ জামে মসজিদে ঈদের তিনটি জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এর মধ্যে সকাল সাড়ে সাতটায় প্রথম জামাত, সাড়ে আটটায় দ্বিতীয় জামাত ও সাড়ে নয়টায় তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে। সকাল আটটায় কালেক্টরেট মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। হজরত শাহজালাল (রহ.) দরগাহ জামে মসজিদে সকাল সাড়ে আটটায় ও শাহপরান (রহ.) মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল সাড়ে আটটায়। গাজী বুরহান উদ্দিন (রহ.) মাজার মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে। সিলেট সরকারি আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে সকাল আটটায় আঞ্জুমানে খেদমতে কোরআন সিলেটের উদ্যোগে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।
ঈদ জামাতকে কেন্দ্র করে সিলেট মহানগর পুলিশের ছয় স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে বলে জানিয়েছেন মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ঈদের দিন ভোর থেকে সিলেট মহানগর এলাকার বিশেষ বিশেষ ঈদ জামাতের স্থানগুলোতে পুলিশি পাহারা শুরু হবে। এর মধ্যে ঈদগাহ প্রাঙ্গণের আশপাশের উঁচু ভবনগুলোতে অবস্থান নিয়ে নজরদারি, ঈদগাহর ভেতরে, ফটকে ও বাইরে তল্লাশিচৌকিতে পুলিশের নিরাপত্তাব্যবস্থা থাকবে। এ ছাড়া বাইরে সাদাপোশাকে পুলিশের গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে। থাকবে ভ্রাম্যমাণ টিম এবং সিসি ক্যামেরা ও ড্রোন দিয়ে নজরদারি করা হবে।
সুনামগঞ্জে ঈদের প্রধান জামাত পৌর শহরের কেন্দ্রীয় ঈদগাহ ময়দানে অনুষ্ঠিত হবে। শহরের ষোলঘর ঈদগাহে সকাল সোয়া আটটা, আরপিননগর ঈদগাহে সকাল পৌনে নয়টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।