বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এ–সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞপ্তি সোমবার রাত ১০টার দিকে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে শেয়ার করেন।
কমিটির বিলুপ্ত করার এই চিঠিতে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনানের যৌথ স্বাক্ষর রয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের এক জরুরি সিদ্ধান্ত মোতাবেক জানানো যাচ্ছে, ছাত্রলীগের বরিশাল মহানগর শাখার আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হলো।
ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান রাত সোয়া ১১টায় কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সাংগঠনিক গতিশীলতা আনা এবং সংগঠনবিরোধী কার্যকলাপ বন্ধে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এ ছাড়া এই কমিটি ছিল তিন মাসের। তাই নিয়মতান্ত্রিকভাবে এটা বিলুপ্ত করা হয়েছে।’
বরিশাল মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আফজুলুল করিম মহানগর ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত করার কথা স্বীকার করে সোমবার রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা ফোনে আমাদের অবহিত করছেন এবং সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরিত চিঠি পেয়েছি।’
সদ্য বিলুপ্ত কমিটির আহ্বায়ক রইস আহম্মেদের নেতৃত্বে রোববার সন্ধ্যায় বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের তিন কর্মীর ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় রইসসহ তাঁর ৯ সহযোগীকে রোববার মধ্যরাতে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। সোমবার তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, ২০২২ সালের ২২ জুলাই বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। ৩২ সদস্যবিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছিল আগামী তিন মাসের জন্য। কিন্তু এই কমিটি বহাল ছিল এত দিন।
আহ্বায়ক কমিটি ঘোষণার পর বরিশালে বিক্ষোভ করেছিলেন পদবঞ্চিত ব্যক্তিরা। মূলত এই কমিটির সবাই ছিলেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র সাদিক আবদুল্লাহর অনুগত। ছাত্রলীগের বঞ্চিত নেতা-কর্মীরা ওই সময় অভিযোগ তুলেছিলেন, গঠনতন্ত্র না মেনে ‘অছাত্র’ ও বিবাহিত ব্যক্তিদের নিয়ে বরিশাল মহানগর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়েছে।
মহানগর ছাত্রলীগের ৩২ সদস্যের আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদনের কথা জানিয়ে গত বছরের ২২ জুলাই রাতে সংগঠনের তৎকালীন কেন্দ্রীয় সভাপতি আল নাহিয়ান খান তাঁর ফেসবুক পেজে তালিকা প্রকাশ করেন। সংগঠনের প্যাডে তিন মাসের জন্য করা ওই অন্তর্বর্তীকালীন কমিটির অনুমোদন দিয়ে সই করেছিলেন সভাপতি আল নাহিয়ান খান ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টাচার্য। কমিটিতে রইসকে আহ্বায়ক এবং মো. মাইনুল ইসলাম ও আরিফুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক করা হয়। অভিযোগ রয়েছে তাঁরা সবাই বিবাহিত।