লক্ষ্মীপুরে বিএনপির এক নেতাকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা ও তিন নেতা–কর্মীকে হত্যার ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধান আসামি করে ৩৫ জনের নামে মামলা হয়েছে। ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বরের এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ১০ বছর ১০ মাস ৪ দিন পর মামলা দায়ের করা হলো।
আজ বৃহস্পতিবার ওই ঘটনার একজন ভুক্তভোগী ও জেলা বিএনপির সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিন বাদী হয়ে অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। আদালতের বিচারক আবু সুফিয়ান মোহাম্মদ নোমান মামলাটি আমলে নিয়েছেন। তিনি মামলা নথিবদ্ধ করার জন্য সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষা উপদেষ্টা মেজর জেনারেল (অব.) তারিক আহমেদ সিদ্দিক, পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক, র্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক (এডিজি) মেজর জেনারেল জিয়াউল আহসান, সাবেক আইজিপি হাসান মাহমুদ খন্দকার, পুলিশের তৎকালীন অতিরিক্ত মহাপরিদর্শক (এআইজি) মাহফুজুর রহমান, সাবেক লক্ষ্মীপুর জেলা প্রশাসক মিজানুর রহমান, র্যাব ১১ এর লে. কর্নেল তারেক সাঈদ, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন।
মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ২০১৩ সালের ১২ ডিসেম্বর লক্ষ্মীপুরে জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান সদস্যসচিব সাহাব উদ্দিনের উত্তর তেমুহনীর বাসায় র্যাব অভিযান চালায়। এ সময় তিনি বাসার পেছনের দরজা দিয়ে পালানোর চেষ্টা করেন। কিন্তু বাইরে অস্ত্র হাতে যুবলীগ নেতা ও তাহেরপুত্র সালাহ উদ্দিন দাঁড়িয়ে ছিলেন বলে তিনি পালাতে পারেননি। পরে র্যাবের তারেক সাঈদসহ আসামিরা তাঁকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তাঁর ডান পায়ের ঊরুতে অস্ত্র ঠেকিয়ে গুলি করেন। পরে তাঁকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখান থেকে পালিয়ে গিয়ে তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
একই দিন জেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইকবাল মাহমুদ, বিএনপির কর্মী মো. মাহবুব ও মো. শিহাবকে গুলি করে হত্যা করা হয়। শেখ হাসিনার নির্দেশে সেদিন হামলা চালিয়ে বাদী সাহাব উদ্দিনকেও হত্যার চেষ্টা করা হয়।
বিএনপি নেতা সাহাব উদ্দিন বলেন, ‘আমাকে মেরে ফেলার উদ্দেশ্য ছিল। কিন্তু পরে পায়ে গুলি করেন তৎকালীন র্যাবের কর্মকর্তা তারেক সাঈদ। আগে মামলা করার অনেক চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছি। এখন সরকার বদল হওয়ায় মামলা করতে পেরেছি।’
বাদীর আইনজীবী আহমেদ ফেরদৌস বলেন, আদালতের বিচারক মামলাটি আমলে নিয়েছেন। এটি থানায় নথিবদ্ধ করার জন্য সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছেন।