গাজীপুরের কালীগঞ্জ উপজেলায় আধিপত্য বিস্তার ও পূর্বশত্রুতার জেরে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে এক নেতা নিহত হয়েছেন। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় উপজেলার মোক্তারপুর ইউনিয়নের নাশু মার্কেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে আরও অন্তত চারজন গুরুতর আহত হয়েছেন।
সংঘর্ষে নিহত ওই নেতার নাম এমদাদুল হক (৬০)। তিনি কালীগঞ্জের মোক্তারপুর ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি ছিলেন। এমদাদুল মোক্তারপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকার হাবিবুর রহমানের ছেলে।
সংঘর্ষে আহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার রাথুরা গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে জহিরুল ইসলাম (৩৫), ফাইজ উদ্দিন শেখের ছেলে মনজু শেখ (৬০), রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইসমাইল শিকদারের ছেলে সীমান্ত শিকদার (২৪) ও বজলুর সরকারের ছেলে মেহিদী হাসান সরকার (৩০)।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কালীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শরিফুল ইসলামের নেতৃত্বে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও আওয়ামী লীগের নেতা মো. আখতারুজ্জামানের পক্ষে কাজ করেন নিহত ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি এমদাদুল হকের লোকজন। অন্যদিকে প্রতিপক্ষ ইউনিয়ন বিএনপির সহসাংগঠনিক সম্পাদক নূর মোহাম্মদের লোকজন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মেহের আফরোজ চুমকিকে সমর্থন দেন। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই বিরোধ চলছিল। সম্প্রতি সরকার পতনের পর আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যেই উত্তেজনা দেখা দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার এমদাদুল হকের লোকজন নূর মোহাম্মদের অনুসারীদের ‘আওয়ামী লীগের দালাল’ আখ্যা দিয়ে এলাকায় প্রচার চালান। আজ বেলা ১১টার দিকে এমদাদুল হকের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা ৮–১০টি মোটরসাইকেলে এলাকায় মহড়া দিয়ে মিছিল করেন। একপর্যায়ে তাঁরা পাশের কাপাসিয়া বুপজেলার দুর্গাপুর ইউনিয়নের নাশু মার্কেট এলাকায় অবস্থান নিলে নূর মোহাম্মদের পক্ষের ৪০–৫০ জন তাঁদের ধাওয়া দেন। এ সময় তাঁরা এমদাদুল হকের ওপর হামলা করলে ঘটনাস্থলেই তিনি নিহত হন। খবর পেয়ে তাঁর লাশ উদ্ধার করে গাজীপুরের শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের মর্গে পাঠায় পুলিশ।
এ ঘটনায় এমদাদুল হকের পক্ষের চারজন আহত হন। তাঁদের কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে ভর্তি করা হয়। অন্যদিকে ঘটনার পর দুপুর ১২টার দিকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শফিকুল ইসলামের বাড়িতে ও কার্যালয়ে হামলা করে ভাঙচুর চালান বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।
গাজীপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) নাজমুস সাকিব খান প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে হত্যাকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটেছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।