খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও মারামারির ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় কুয়েট শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রুদ্রনীল সিংহসহ ১২ জনের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৪০-৫০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
নগরের খানজাহান আলী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মমতাজুল হক বিষয়টি নিশ্চিত করে প্রথম আলোকে বলেন, আজ মঙ্গলবার কুয়েটের শিক্ষার্থী তাহমিদুল হক খানজাহান আলী থানায় ওই মামলা করেন। মামলায় তিনি মারপিট, হলে উঠতে বাধা দেওয়া, টাকাপয়সা কেড়ে নেওয়া ও জীবননাশের হুমকির অভিযোগ উল্লেখ করেছেন। তাহমিদুল কুয়েট ছাত্রলীগের আগের কমিটির নেতা।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, কুয়েট ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের কমিটি গঠনকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই উত্তেজনা চলছিল। এর মধ্যে গত নভেম্বরের শেষ দিকে কুয়েট ছাত্রলীগ সভাপতি রুদ্রনীল সিংহ ও তাঁর অনুসারীদের বিরুদ্ধে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে লালন শাহ হল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। গত রোববার গভীর রাতে হলের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীরা হলে প্রবেশ করতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে মারামারি হয়। এতে কয়েকজন শিক্ষার্থী আহত হন। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। পাশাপাশি লালন শাহ হল থেকে ২১ জনকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে। গতকাল সোমবার লালন শাহ হলের প্রভোস্ট মো. আবদুল হাফিজ মিয়া স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন সাফায়েত সাইমুম, নিলান খালেক, আবদুল্লাহ ইবনে জয়নাল, শাহরিয়ার ফেরদৌস, শাহনেওয়াজ পারভেজ, তৈয়ব ইয়াসির, জুনায়েত হক সরকার, জুবাইদুর হোসেন, মো. সাব্বির হোসেন, মো. আদনান ইসলাম, তাহমিদুল হক, মিনহাজুর রহমান, ফজলে রাব্বি, সাদিক বিন ফারুক, আবির হাসান, মো. আবু বক্কর সিদ্দিক, অমিত কুমার ঘোষ, অরিত্র দেবনাথ, মেফতাউল মাহমুদ, সুদীপ্ত তালুকদার ও মিজানুর রহমান।
লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. আবদুল হাফিজ মিয়া বলেন, কিছু ছাত্র হলের বাইরে ছিলেন। তাঁরা রোববার গভীর রাতে লালন শাহ হলে উঠতে চাইলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় ২১ ছাত্রকে হল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।
কুয়েটের ছাত্রবিষয়ক পরিচালক অধ্যাপক মো. আবদুল মতিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘মঙ্গলবার থেকে পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি কাজ শুরু করছে। শিগগিরই তাদের প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। দুই গ্রুপের মধ্যে উত্তেজনা অনেকটা প্রশমিত হয়েছে। তারপরও পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আমরা সবাই তৎপর আছি।’