জাহাঙ্গীরনগরে শিক্ষার্থীর অবস্থান

‘দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি আর স্যালাইন নেব না’

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে তিন দাবিতে ষষ্ঠ দিনের মতো অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন সামিউল ইসলাম। মীর মশাররফ হোসেন হলের খেলার মাঠ থেকে তাঁর অবস্থান স্থানান্তরিত করে হল কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়েছেন তিনি। মঙ্গলবার দুপুরে হল কার্যালয়ের বারান্দায়
ছবি: প্রথম আলো

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক হল থেকে অছাত্রদের বের করে দেওয়াসহ তিন দফা দাবিতে অবস্থানরত সামিউল ইসলামের শরীরের অবস্থা সোমবার খারাপ হতে শুরু করেছিল। এমন অবস্থায় রাত ১০টার দিকে তিনি স্যালাইন নেন। এখন তিনি বলছেন, তাঁর দাবিগুলো পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আর কোনো স্যালাইন নেবেন না।

নিজের অবস্থানের বিষয়ে এখনো অনড় আছেন জানিয়ে আজ দুপুরে প্রথম আলোকে সামিউল ইসলাম বলেন, ‘গতকাল আমার শরীরের অবস্থা খারাপ হতে শুরু করেছিল। আমার রক্তচাপ ৯০/৬০-এ নেমে এসেছিল। এই আন্দোলন সফল করতে আন্দোলনে টিকে থাকার স্বার্থে আমি স্যালাইন গ্রহণ করি। তবে আমার দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আমি আর স্যালাইন নেব না।’

এর আগে গত শনিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলম আন্দোলনকারী সামিউল ইসলামের কাছে গিয়ে তাঁর সব দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেন এবং সাত দিন সময় চেয়ে নেন। তবে সামিউল জানান, দৃশ্যমান কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ না দেখা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবেন। হলগুলোতে অছাত্রদের তালিকা দেখালেই কেবল স্যালাইন নেবেন।

সামিউল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৪৯ ব্যাচ এবং মীর মশাররফ হোসেন হলের আবাসিক শিক্ষার্থী। গত বুধবার রাত থেকে তিনি মীর মশাররফ হোসেন হলের খেলার মাঠে অবস্থান নেন। তবে আজ মঙ্গলবার সকাল থেকে তিনি হলের অফিস কক্ষের সামনে অবস্থান নিয়েছেন। অছাত্রদের হল থেকে বের করা ছাড়াও তাঁর অন্য দাবি দুটি হলো হলগুলোতে গণরুম বিলুপ্ত করা এবং মিনি গণরুমে অবস্থান করা শিক্ষার্থীদের আসন নিশ্চিত করা।

তাঁর আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যে হল প্রশাসন থেকে অছাত্রদের কক্ষে গিয়ে হল ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়েছে। অবৈধ শিক্ষার্থীদের বের করার জন্য তালিকা তৈরির কার্যক্রম চলমান আছে বলে জানিয়েছেন মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক মো. সাব্বির আলম। প্রথম আলোকে তিনি বলেন, ‘তাঁর (সামিউলের) দাবির সঙ্গে প্রশাসন পুরোপুরি একমত। আমরা আগে থেকেই গণরুম বিলুপ্তির কাজ শুরু করেছিলাম। ইতিমধ্যে হলে নোটিশ দিয়েছি অছাত্রদের হল ছাড়ার জন্য। তাঁর দাবি বাস্তবায়নে সব ধরনের কার্যক্রম চলমান আছে। তবে বাস্তবায়ন করতে একটু সময় প্রয়োজন।’

এদিকে অবৈধ শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নোটিশ দেওয়ার পর সোমবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে অনশনকারী সামিউল যেখানে অবস্থান নিয়েছেন, তাঁর পাশে এসে অবস্থান নেন ওই হলের শতাধিক অবৈধ শিক্ষার্থী। এ সময় বিদ্যুৎ ছিল না। তাঁরা অনশনকারী শিক্ষার্থী ও তাঁর সঙ্গে থাকা বামপন্থী ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাছে গিয়ে বিভিন্ন হুমকি ও গালিগালাজ দিতে থাকেন।

এ বিষয়ে সামিউল বলেন, ‘আমি হুমকি–ধমকিতে শঙ্কিত নই। আমি দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাব।’