সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সিলেট কারা হাসপাতাল থেকে আজ মঙ্গলবার সকালে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে
সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে সিলেট কারা হাসপাতাল থেকে আজ মঙ্গলবার সকালে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে

এম এ মান্নানকে ওসমানী মেডিকেলে স্থানান্তর, মেডিকেল বোর্ড গঠন

সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী ও সুনামগঞ্জের সাবেক সংসদ সদস্য এম এ মান্নানকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের হাসপাতাল থেকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে তাঁকে ওসমানী হাসপাতালে নেওয়া হয়। দুপুরে মেডিকেলের অধ্যক্ষ ও মেডিসিন বিভাগের প্রধান শিশির রঞ্জন চক্রবর্তীকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।

হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, সাবেক পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নানকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালে আনা হয়েছে। হাসপাতালের বহির্বিভাগে চাপ থাকায় তাঁকে কেবিনে পরীক্ষা করা হয়। পরে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক তাঁকে ভর্তি করার জন্য বলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এম এ মান্নানকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

এর আগে গত শনিবার সকালে সুনামগঞ্জ জেলা কারাগার থেকে জেলা সদর হাসপাতালে নেওয়া হয় এম এ মান্নানকে। সেখান থেকে চিকিৎসকেরা সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন। এরপর ওই দিন বিকেলে তাঁকে সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানোর পর সেখানকার চিকিৎসকেরা তাঁর চিকিৎসা করছিলেন।

এম এ মান্নানকে ১৯ সেপ্টেম্বর রাতে শান্তিগঞ্জ উপজেলার নিজ বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। পরদিন তাঁকে সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে করা একটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি সুনামগঞ্জ জেলা কারাগারে ছিলেন। সর্বশেষ গত রোববার আদালতে তাঁর জামিনের আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু জামিন মঞ্জুর হয়নি।

এম এ মান্নানকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জে সুনামগঞ্জ-সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ, বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষার্থীরা। অন্যদিকে তাঁর শাস্তির দাবিতে শান্তিগঞ্জ ও সুনামগঞ্জ শহরে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা একাধিকবার বিক্ষোভ করেছেন।

সুনামগঞ্জ পৌর শহরে গত ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী জহুর আহমদের ভাই জেলার দোয়ারাবাজার উপজেলার বাসিন্দা হাফিজ আহমদ বাদী হয়ে ২ সেপ্টেম্বর সদর মডেল থানায় দ্রুত বিচার আইনে একটি মামলা করেন। মামলায় এম এ মান্নানসহ ৯৯ জনকে আসামি করা হয়। মামলায় অজ্ঞাতনামা আসামি আছেন আরও ১৫০ থেকে ২০০ জন। তবে এখন পর্যন্ত এম এম মান্নান ছাড়া এ মামলার এজাহারনামীয় আর কোনো আসামিকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি।

এম এ মান্নান সরকারের যুগ্ম সচিব হিসেবে চাকরিজীবন শেষ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেন। সুনামগঞ্জ-৩ আসনে ২০০৮ সাল থেকে টানা চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। ২০১৪ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকারের অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ছিলেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনের পর সরকারের পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পান। এবার তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলেও তাঁকে মন্ত্রী করা হয়নি।