কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী পারভেজ আনোয়ার ওরফে তনু (ঈগল প্রতীক) অভিযোগ করেছেন, ‘আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ নির্বাচনের ফল তাঁর পক্ষে নিতে নানাভাবে চক্রান্ত করছেন। তিনি (হানিফ) প্রশাসনের একটি অংশ ব্যবহার করে ফলাফল তাঁদের অনুকূলে নিতে পরিকল্পনা সাজাচ্ছেন। এরই অংশ হিসেবে তিনি (হানিফ) তাঁর পিটিআই সড়কের বাড়িতে আজ (শনিবার) সকাল থেকে একাধিক সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।’
কুষ্টিয়ায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন পারভেজ আনোয়ার। আজ বেলা তিনটার দিকে শহরের নিজ বাসভবনে এ সংবাদ সম্মেলন করেন পারভেজ আনোয়ার।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পারভেজ আনোয়ার বলেন, তাঁদের (হানিফের) নিজস্ব অনেক অনুগত শিক্ষককে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেছেন। যাঁরা নিয়মিত নৌকার প্রচারণা চালাচ্ছেন এমন শিক্ষককে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন। অভিযোগ দেওয়ার পরও তাঁদের নিয়োগ বাতিল করা হয়নি। কুষ্টিয়া ইসলামিয়া কলেজের অনেক জ্যেষ্ঠ অধ্যাপককে বাদ দিয়ে নন–এমপিও অস্থায়ী শিক্ষক সুজন কুমার বিশ্বাস, প্রতাপ কুমার বিশ্বাসসহ একাধিক শিক্ষক যাঁরা নৌকার পক্ষে কাজ করেছেন, তাঁদেরকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তথ্য এসেছে সদর আসনের ৪০ থেকে ৪৫টি ভোটকেন্দ্রের বাইরে পরিকল্পিতভাবে গোলযোগ তৈরি করে ভোটকেন্দ্র দখলে নেওয়ার চেষ্টা করবে। যদিও বিশ্বাস চৌকস আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের সেই সুযোগ দেবে না।
পারভেজ আরও বলেন, তাঁদের ষড়যন্ত্র এখন অনেকটা প্রকাশ্যে চলে এসেছে। কারণ, ভোটের ঠিক এক দিন আগে থেকে পারভেজের পোলিং এজেন্টদের হুমকি দেওয়া শুরু হয়েছে। তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে ঈগলের পোলিং এজেন্ট হলে নির্বাচনের আগের রাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাঁদের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাবে।
পারভেজ আনোয়ার প্রধানমন্ত্রী ও নির্বাচন কমিশনের সুদৃষ্টি কামনা করে বলেন, ‘আমার বাবা কুষ্টিয়া পৌরসভার দীর্ঘদিনের মেয়র আনোয়ার আলী। তিনি দীর্ঘদিন কুষ্টিয়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। আমরা আওয়ামী লীগ পরিবার হিসেবে কুষ্টিয়ার মানুষের কাছে স্বীকৃত। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কথায় আশ্বস্ত হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের আশায় কুষ্টিয়া সদর আসনের সংসদ সদস্য প্রার্থী হয়েছি। যেখানে জননেত্রী শেখ হাসিনা অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন চাচ্ছেন এবং সর্বাধিক ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে বলছেন, সেখানে একটি কুচক্রী মহল ভোটারদের ভয়ভীতি দেখাচ্ছে এবং ভোটকেন্দ্রে যেতে বাধা প্রদান করছে।’
সংবাদ সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আমিনুল হক রতনসহ পারভেজের কয়েকজন স্বজন উপস্থিত ছিলেন।
জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাওয়া যায়নি। তবে নির্বাচনের পরিবেশ এখন পর্যন্ত ভালো রয়েছে। কুষ্টিয়াবাসীকে জানাতে চাই ভোট গ্রহণের পরিবেশ অত্যন্ত নিরাপত্তামূলক ও শান্তিপূর্ণ বিরাজ করছে এবং বিরাজ করবে আমরা এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করছি। ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে যেন ভোট প্রদান করতে পারেন, সে বিষয়ে সর্বাত্মক সহযোগিতা প্রদান করব।’