কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তন চান শিক্ষার্থীরা

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
ছবি: সংগৃহীত

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের শেখ হাসিনা হলের নাম পরিবর্তনের দাবিতে হল প্রাধ্যক্ষের কাছে আবেদন করেছেন আবাসিক শিক্ষার্থীরা। তাঁরা হলটির নতুন নাম হিসেবে ‘বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল’ করার প্রস্তাব করেছেন। সুনীতি ও শান্তি দুজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।

শেখ হাসিনা হলে প্রায় ৪০০ শিক্ষার্থী রয়েছেন। হলের নাম পরিবর্তনের আবেদনপত্রে ১৬১ জন স্বাক্ষর করেছেন। সোমবার শিক্ষার্থীদের আবেদনটি পেয়েছেন দাবি করে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শেখ হাসিনা হলের প্রাধ্যক্ষ মোসা. শাহিনুর বেগম বলেন, এরই মধ্যে আবেদনপত্র রেজিস্ট্রার দপ্তরে পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ বিষয়ে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবে।

আবেদনে আবাসিক শিক্ষার্থীরা উল্লেখ করেছেন, জুলাইয়ে স্বৈরাচারী সরকারের নির্বিচার হামলা, গুলিবর্ষণ ও হত্যার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনার কারণে তাঁরা হলটির নাম পরিবর্তন করে শিক্ষার্থীদের মতানুসারে বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল করা হোক। হলের বর্তমান নামটি ৫ আগস্টের মতাদর্শের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয় বলে মনে করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের ভাষ্য, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এ ধরনের স্বৈরাচারী শাসকের নামের সঙ্গে সংযুক্ত করা হলে এর নিরপেক্ষতা ও বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতায় প্রভাব পড়তে পারে। একটি হলের নামকে ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক বা শিক্ষাবান্ধব প্রতীকী দিকের ভিত্তিতে রাখা হলে তা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রাণিত করবে এবং তাদের মধ্যে ঐক্য ও সামগ্রিক দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি করতে সহায়তা করবে। একই সঙ্গে শেখ হাসিনার ম্যুরাল অপসারণের জন্যও আবেদন জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

আবেদনে শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘এরই মধ্যে স্থানীয় এলাকাবাসী বিষয়টি নিয়ে বারবার আমাদের জানিয়েছেন, আমরা এটি অপসারণ না করলে তাঁরা নিজেরা হলে ঢুকে এটি অপসারণের ব্যবস্থা নেবেন। ফলে আবাসিক নারী শিক্ষার্থীরা একধরনের নিরাপত্তাহীনতায়ও ভুগছেন। তাই দ্রুত এ বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’

হলের আবাসিক শিক্ষার্থী রিমা আক্তার, ফারিয়া রিমিসহ অন্তত পাঁচজন বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সারা দেশে অসংখ্য শিক্ষার্থী জীবন দিয়েছেন। তাঁদের ত্যাগে দেশ স্বৈরাচারমুক্ত হয়েছে। এমন একজন স্বৈরাচারের নামে একটা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল হতে পারে না। স্বৈরাচারের কোনো চিহ্নও থাকা শিক্ষার্থীদের জন্য অসহনীয়। তাই তাঁরা হলের নাম পরিবর্তন করে নতুন নাম বিপ্লবী সুনীতি-শান্তি হল করার জন্য আবেদন দিয়েছেন।

নতুন নাম প্রসঙ্গে শিক্ষার্থীরা জানান, সুনীতি ও শান্তি দুজন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। তবে পরবর্তী সময়ে তাঁদের সম্মাননায় তেমন কিছু করা হয়নি। তাই শেখ হাসিনা হলের নাম তাঁদের নামে করে তাঁদের সম্মানিত করতে চান শিক্ষার্থীরা। এ বিষয়ে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে বলে বিশ্বাস শিক্ষার্থীদের।