দলীয় চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি ও সুচিকিৎসার দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে নেত্রকোনায় আজ শনিবার সকালে বিক্ষোভ ও পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করে জেলা বিএনপি। শহরের বনোয়াপাড়া এলাকায় এই কর্মসূচির শেষে সেখানে ককটেল বিস্ফোরণ ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় দলটির ছয় নেতাকে আটক করে পুলিশ। পরে ৩১ জনের নাম উল্লেখসহ ৫০০ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি সজল তালুকদার, সদর উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সৈয়দ মোকসেদুল আলম, যুগ্ম আহ্বায়ক সারোয়ার শাহেদ, মদন উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক অলী উল্লাহ, সদরের আমতলা ইউনিয়ন যুবদলের সদস্যসচিব সাফায়াত হোসেন ও একই ইউনিয়নের শ্রমিক দলের সদস্য আবদুল মান্নান।
তবে জেলা বিএনপির সদস্যসচিব রফিকুল ইসলাম হিলালী মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি পালন শেষে নেতা-কর্মীরা ফিরে যাচ্ছিলেন। এ সময় ছাত্রলীগ নামধারী একদল যুবক কুড়পাড় সিএনজি স্টেশন এলাকায় একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটান ও সেখানে সিএনজি ভাঙচুর চালান। হামলায় শ্রমিক দলের নেতা খায়রুল ইসলাম, শামছু মিয়া, ছাত্রদল নেতা রাকিব মিয়া, রফিকুল ইসলাম, যুবদলকর্মী বজলুর রাশেদসহ আটজন আহত হন। ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুর করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছেন বলে অভিযাগ করেন তিনি।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সোবায়েল আহমেদ খান বলেন, ‘ছাত্রলীগের কোনো নেতা-কর্মী হামলা বা ভাঙচুরের ঘটনার সঙ্গে জড়িত নন। বিএনপিই এই কাজ করে আমাদের সংগঠনের বিরুদ্ধে অপপ্রচার করছে।’
ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা পরিকল্পিতভাবে ককটেল বিস্ফোরণ ও ভাঙচুর করে বিএনপির ওপর দোষ চাপাচ্ছেন।রফিকুল ইসলাম হিলালী, সদস্যসচিব, নেত্রকোনা জেলা বিএনপি
পুলিশ ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল আটটার দিকে শহরের বনোয়াপাড়া মোড় এলাকায় নেত্রকোনা বিএনপির আহ্বায়ক মো. আনোয়ারুল হক ও সদস্যসচিব মো. রফিকুল ইসলাম হিলালীর নেতৃত্বে দলীয় নেতা-কর্মীরা জড়ো হন। সেখানে বক্তব্য শেষে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। আবু আব্বাছ ডিগ্রি কলেজের সামনে গিয়ে ওই মিছিল শেষ হয়। নেতা-কর্মীরা চলে যাওয়ার সময় কুড়পাড় সিএনজি স্টেশন এলাকায় দুর্বৃত্তরা দুটি ককটেল বিস্ফোরণ ও একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ভাঙচুর চালায়। উপস্থিত পুলিশ সদস্যরা যুবদল ও ছাত্রদলের ছয়জন নেতাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে দুপুরে নেত্রকোনা মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সাদ্দাম হোসেন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৪৫০ থেকে ৫০০ জনকে আসামি করে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন। আটক ছয়জনকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. লুৎফুল হক প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা অনুষ্ঠানের নামে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। তাঁরা দুটি ককটেল বিস্ফোরণসহ সিএনজি ভাঙচুর চালান। এ সময় ঘটনাস্থল থেকে ছয়জনকে আটক করার পাশাপাশি চারটি অবিস্ফোরিত ককটেল, কিছু দেশীয় অস্ত্র জব্দ করা হয়েছে। এ ঘটনায় নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। মামলায় গ্রেপ্তার হওয়া আসামিদের বিকেলে আদালতে সোপর্দ করা হয়। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।