মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করায় নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির এক নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। বহিষ্কৃত ওই নেতার নাম জামাল উদ্দিন গাজী। তিনি সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সদস্য। তবে জামাল উদ্দিন বলছেন, শোভাযাত্রা দূরে থাক, গত এক মাসে মোটরসাইকেলেও চড়েননি তিনি। কেন্দ্রকে কেউ ভুল বুঝিয়েছে তাঁর নামে।
গতকাল সোমবার রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে কেন্দ্রীয় বিএনপির পক্ষ থেকে জামাল উদ্দিনকে দল থেকে বহিষ্কারের একটি চিঠি প্রকাশ পায়। যাতে স্বাক্ষর করেছেন দলের জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। চিঠিতে জামাল উদ্দিন গাজীর বিরুদ্ধে দলের নির্দেশনা অমান্য করে মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা করার অভিযোগ আনা হয়েছে।
জামাল উদ্দিন গাজীকে উদ্দেশ্য করে কেন্দ্রীয় বিএনপির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘দলীয় নির্দেশ উপেক্ষা করে আপনি মোটরসাইকেল বহর নিয়ে শোভাযাত্রা বের করেছেন, যা দলের শৃঙ্খলার প্রতি চরম অবমাননা। সুতরাং শৃঙ্খলার অবমাননার দায়ে আপনাকে সুবর্ণচর উপজেলা বিএনপির সদস্য পদসহ সকল পর্যায়ের পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।’
চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বিএনপির চট্টগ্রাম বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাহবুবের রহমান ওরফে শামীম, সহসাংগঠনিক সম্পাদক হারুনুর রশিদ ওরফে হারুন ও মীর হেলাল উদ্দিন এবং নোয়াখালী জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকে অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। গতকাল রাতে কেন্দ্রীয় বিএনপির দপ্তর থেকে চিঠিটি ইস্যু করার পর পরই তা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
এ বিষয়ে বক্তব্য জানতে চাইলে বিএনপির নেতা জামাল উদ্দিন গাজী প্রথম আলোকে বলেন, মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দূরের কথা, তিনি গত এক মাসের বেশি সময়ের ভেতর কারও মোটরসাইকেলে উঠেছেন বলে মনে পড়ছে না। গতকাল সোমবার প্রায় পাঁচ কিলোমিটার পায়ে হেঁটে কয়েক হাজার নেতা-কর্মীর মিছিল নিয়ে খাসেরহাটে শেখ হাসিনাসহ ফ্যাসিস্টদের দোসরদের বিচার ও ফাঁসির দাবিতে সমাবেশে যোগ দিয়েছেন।
জামাল উদ্দিন গাজীর দাবি, তিনি স্কুলজীবন থেকে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। গত ১৬ বছরে অনেক মামলার আসামি হয়েছেন। তিনি এরই মধ্যে সুবর্ণচর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। ওই কারণে দলের ভেতরের কোনো কুচক্রী কেন্দ্রীয় বিএনপিকে ভুল বুঝিয়ে তাঁকে বহিষ্কারের চিঠি দেওয়ার ব্যবস্থা করেছেন।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহমান এ প্রসঙ্গে প্রথম আলোকে বলেন, জামাল উদ্দিন গাজী গতকাল পাঁচ-সাত কিলোমিটার পায়ে হেঁটে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে দলের সমাবেশে যোগ দিয়েছেন। সেখানে তাঁরা কোনো মোটরসাইকেল শোভাযাত্রা দেখেননি। কেন্দ্রীয় নেতাদের ভুল বুঝিয়ে দলের কেউ তাঁকে বহিষ্কার করিয়েছেন।