বর্ষা ঘিরে চলনবিল অঞ্চলে ডিঙিনৌকার কদর বাড়ছে। বর্ষায় চলনবিল ও তার মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া নদীনালাগুলো পানিতে থইথই করে। এ সময় ডিঙিনৌকাকে উপজীব্য করে মাছ ধরা, মানুষ ও মালামাল পারাপার করে জীবিকা নির্বাহ করে থাকেন নিম্ন আয়ের মানুষ। এ কারণে বর্ষাকালে ডিঙিনৌকা তৈরি ও বিক্রির মৌসুমি ব্যবসায়ীরা সক্রিয় হয়ে উঠেছেন।
নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার চাঁচকৈড় হাটে গড়ে উঠেছে কমপক্ষে ১৫টি কারখানা। সেখানে তৈরি হচ্ছে ছোট–বড় নৌকা।
মঙ্গলবার চাঁচকৈড় হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিটি কারখানায় ছয় থেকে আটজন কারিগর নৌকা তৈরি করছেন। চাহিদা বেশি থাকায় দম ফেলার ফুরসত নেই তাঁদের। কারখানায় তৈরি করা এসব নৌকা সড়কের দুই পাশে রাখা হয়েছে ক্রেতা আকর্ষণের জন্য। দেখেশুনে চাহিদামতো নৌকা কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা।
আকার-আকৃতিভেদে প্রতিটি ডিঙিনৌকা ২ হাজার ২০০ থেকে ৬ হাজার ৫০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বিগত বছরগুলোর চেয়ে এবার প্রতিটি নৌকা দেড় থেকে দুই হাজার টাকা বেশি বলে জানান ক্রেতারা।
নৌকার দাম বাড়ার কারণ নিয়ে কারখানামালিক আমিরুল ইসলাম ও আলাল ফকির জানান, কাঠ-লোহা ও কারিগরের মজুরি বেড়েছে। এগুলো সমন্বয় করতে নৌকার দাম বেড়েছে। এ বছর বৃষ্টি-বন্যার আশঙ্কা বেশি। ক্রেতার চাহিদাও বেশি। চাহিদার তুলনায় নৌকা কম বানানো হয়, দামও বেড়ে যায় তাতে।
সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার নাদোসৈয়দপুর থেকে আসা হাসান মিয়া বলেন, চলনবিলের নিচু এলাকায় পানি থইথই করছে। কিছুদিনের মধ্যে পানিতে টইটম্বুর করবে চলনবিল। এ সময় এলাকায় কাজ থাকে না। মাছ ধরে সংসার চালাতে হবে। পরিস্থিতি বুঝে ডিঙিনৌকা কিনতে এসেছেন তিনি।
চাঁচকৈড় হাটের বেশ কয়েকজন নৌকা ব্যবসায়ী বলেন, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও নাটোরের সীমান্তে চাঁচকৈড় হাটের অবস্থান। এই তিন জেলাকে ঘিরেই চলনবিল। ভৌগোলিক কারণে এসব জেলার নিম্ন আয়ের মানুষ নৌকা কিনতে আসেন। বর্ষায় তাঁদের বিকল্প কাজ থাকে কম। এই নৌকাকে ঘিরে চলনবিলে মাছ ধরে, মানুষ পারাপার ও মালামাল বহন করে সংসার চালান অসংখ্য মানুষ।