নেত্রকোনার কলমাকান্দা উপজেলায় বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এ সময় উভয় পক্ষের প্রায় ৫০ জন আহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে গিয়ে চার পুলিশ আহত হয়। পরে পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। আজ শুক্রবার বেলা দুইটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত উপজেলা সদরের ধানমহাল এলাকা ও পশ্চিম বাজারের মার্কাস মসজিদ এলাকায় এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
প্রত্যক্ষদর্শী, পুলিশ ও দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে দুপুর ১২টা থেকে কলমাকান্দার ৮ ইউনিয়ন থেকে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে উপজেলা সদরের ধানমহাল এলাকায় দলীয় কার্যালয়ের সামনে জড়ো হতে থাকেন। বেলা দুইটার দিকে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীরা প্রতিবাদ মিছিল বের করেন। মিছিল শেষে বিএনপির নেতা-কর্মীদের অনুষ্ঠান করতে বাধা দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।
কলমাকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসলাম উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগ বিএনপির কর্মসূচিতে কোনো বাধা দেয়নি; বরং বিএনপি অভ্যন্তরীণ কোন্দলে নিজেদের মধ্যে মারামারি করে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে আওয়ামী লীগের ওপর হামলা চালায়। হামলায় আওয়ামী লীগের ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক এম এ খায়ের বলেন, ‘আমরা প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করতে থানায় অনুমতির জন্য যাই, কিন্তু দেওয়া হয়নি। পরে দুপুরে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের দিকে আসতে থাকলে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। এতে উপজেলা ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলের ২০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে পাঁচজন গুলিবিদ্ধ হন।’
কলমাকান্দা উপজেলা কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মামুন আজ বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, ‘সংঘর্ষে আহত ১৫ জন হাসপাতালে এসেছিলেন। তাঁদের সবাইকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।’
কলমাকান্দা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল কালাম বলেন, বিএনপির নেতা-কর্মীরা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় তাঁরা পুলিশের ওপর হামলা চালায়। এতে থানার চার পুলিশ সদস্য আহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সাত রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছে। পুলিশের ওপর হামলা ও সরকারি কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে থানায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।