নাটোরের সিংড়া উপজেলায় আবদুর রাজ্জাক (৭০) নামের জামায়াতে ইসলামীর এক নেতাকে অস্ত্রের মুখে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা ভেঙে দিয়েছে মুখোশধারী দুর্বৃত্তরা। আজ শুক্রবার দুপুরে উপজেলার কালীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সামনে থেকে দুর্বৃত্তরা তাঁকে তুলে নিয়ে যায়।
আহত আবদুর রাজ্জাক (৭০) সিংড়া উপজেলার ছাতারদীঘি ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি এবং করচমারি গ্রামের বাসিন্দা। দীর্ঘদিন ধরে করচমারি মসজিদে ইমামতি করেন তিনি। দুর্বৃত্তরা তাঁকে বগুড়ার নন্দীগ্রামের ভাগবাটন কল্যাণনগর এলাকায় সড়কের পাশে ফেলে যায়। তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্বজন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আবদুর রাজ্জাক কালীগঞ্জ বড় মসজিদে জুমার নামাজ আদায় করে মোটরসাইকেলে নিজ বাড়ি করচমারি এলাকায় ফিরছিলেন। কালীগঞ্জ ডিগ্রি কলেজের সামনে পৌঁছালে মুখোশধারী ৬–৭ জন দুর্বৃত্ত তাঁকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। দুর্বৃত্তরা রড দিয়ে পিটিয়ে দুই পা রক্তাক্ত করার পর বগুড়ার নন্দীগ্রামের ভাগবাটন কল্যাণনগর এলাকায় রাস্তার পাশে তাঁকে ফেলে যায়। পথচারীরা তাঁকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। পরে তাঁর ছেলেসহ অন্য স্বজনেরা হাসপাতালে যান।
আবদুর রাজ্জাকের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর বাবার অবস্থা খুবই খারাপ। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর দুই পায়ের হাড় ভেঙে গেছে। তাঁরা বাবার চিকিৎসা নিয়ে ব্যস্ত আছেন।
সিংড়া উপজেলা জামায়াতের আমির আ ব ম আমান উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, আবদুর রাজ্জাক দীর্ঘদিন ধরে এলাকায় ইমামতি করছেন। তাঁর সঙ্গে ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে কারও বিরোধ ছিল বলে তাঁরা জানেন না। তাঁদের ধারণা, ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে তাঁকে মারধর করা হয়েছে। মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, প্রায় তিন বছর আগে জেলা জামায়াতের আমির বেলালুজ্জামানকে একইভাবে তুলে নিয়ে মারধর করা হয়েছিল। ওই ঘটনায় মামলা হলেও বিচার হয়নি। কারা মেরেছিল আজও জানা যায়নি। তাই আপাতত তাঁরা মামলা করার কথা ভাবছেন না।
সিংড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, খবর পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে জেনেছেন, জুমার নামাজ শেষে ওই ব্যক্তি বাড়িতে ফিরছিলেন। পথে কয়েকজন তাঁকে মারধর করে আহত করেছে। ভুক্তভোগীর সঙ্গে কথা না বলে কারা তাঁকে মারধর করেছে বলা সম্ভব না।
এর আগে গত এক মাসে নাটোরের নলডাঙ্গাসহ বিভিন্ন উপজেলায় অন্তত সাতজনকে একইভাবে তুলে নিয়ে মারধর ও জখম করে দুর্বৃত্তরা। কোনোটি মুখোশ পরে, কোনোটি হেলমেট পরে ভুক্তভোগীদের নির্যাতন চালানো হয়। ভুক্তভোগীদের মধ্যে যুবদলের দুই নেতা ছাড়া বাকি সবাই জামায়াতের নেতা-কর্মী।