কোটা সংস্কার আন্দেলনকারীদের বিরুদ্ধে সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান নেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা ওরফে টিনু। আজ বিকেলে নগরের প্রবর্তক মোড় এলাকায়
কোটা সংস্কার আন্দেলনকারীদের বিরুদ্ধে সমর্থকদের নিয়ে অবস্থান নেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা ওরফে টিনু।  আজ বিকেলে নগরের প্রবর্তক মোড় এলাকায়

চট্টগ্রামে ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে আন্দোলনকারীদের মারধর

চট্টগ্রাম নগরের প্রবর্তক মোড়ে এক ওয়ার্ড কাউন্সিলরের নেতৃত্বে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলার অভিযোগ উঠেছে। আজ মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের চকবাজার ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নূর মোস্তফার নেতৃত্বে এ হামলা হয়।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, কোটার সংস্কার আন্দোলনে যুক্ত বিভিন্ন কলেজের শিক্ষার্থীরা মঙ্গলবার বিকেলে নগরের প্রবর্তক মোড়ে অবস্থান নেন। এ সময় প্রবর্তক মোড়ের বায়েজিদ বোস্তামী সড়কের রূপনগর কমিউনিটি সেন্টারের সামনে থেকে মিমি সুপারমার্কেট পর্যন্ত অংশে অবস্থান নেন ছাত্রলীগের নেতা–কর্মীরা। এ সময় সেখানে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করে। দুই পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিলেও শুরুতে কোনো ধরনের পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনা ঘটেনি।

কিন্তু মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটায় চকবাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফার নেতৃত্বে একদল কর্মী চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মর্গের দিক থেকে প্রবর্তক মোড়ে আসেন। তাঁদের আরও কিছু সমর্থক শেভরনের দিক থেকে প্রবর্তক মোড়ে এগিয়ে আসেন। তাঁদের অনেকের হাতে লাঠি ছিল। পরে তাঁরা সবাই একত্র হয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা করেন। ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। পরে প্রাণ বাঁচাতে শিক্ষার্থীরা আশপাশের গলিতে ঢুকে পড়েন। সেখানে গিয়েও তাঁদের মারধর করা হয়। হামলার পর একপর্যায়ে সমর্থকদের নিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন ওয়ার্ড কাউন্সিলর নূর মোস্তফা। এতে অন্তত চার–পাঁচজন আহত হয়েছেন। তবে তাঁদের পরিচয় পাওয়া যায়নি।

শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে কাউন্সিলর নূর মোস্তফা প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওরা (আন্দোলনকারী) সরকারি সম্পত্তি ভাঙচুর করছিল। তাই সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করতে বাধা দিতে ছেলেরা (তাঁর সমর্থক) ওখানে গিয়েছিল। এতে দুই পক্ষের মধ্যে ঝামেলা হয়েছিল।’

নিজেকে যুবলীগ নেতা ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ এক মন্ত্রীর অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন নূর মোস্তফা। নির্বাচিত কাউন্সিলরের মৃত্যুর পর ২০২১ সালের ৭ অক্টোবর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে নূর মোস্তফা ৭৮৯ ভোট পেয়ে জয়ী হন।

২০১৯ সালের ২২ সেপ্টেম্বর নগরের কাপাসগোলা এলাকার বাসা থেকে অস্ত্র–গুলিসহ গ্রেপ্তার হয়েছিলেন নূর মোস্তাফা। সেই মামলায় তাঁর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্রও দেওয়া হয়। পরে জামিনে বের হন। নূর মোস্তাফার বিরুদ্ধে ছিনতাই, চাঁদাবাজি, অস্ত্র আইনে পাঁচটি মামলা রয়েছে। এ ছাড়া সম্প্রতি যুবলীগের এক কর্মীকে ওয়ার্ড কার্যালয়ে নিয়ে পেটানো ও হুমকির অভিযোগে করা মামলায় কারাগারে গিয়েছিলেন তিনি। নূর মোস্তফা নগর পুলিশের তালিকাভুক্ত কিশোর গ্যাং লিডার বা নেতা। তাঁর একার প্রশ্রয়ে রয়েছে ১৪টি কিশোর গ্যাং।