বিজয় দিবস উদ্‌যাপনে আরও স্পষ্ট হলো সিলেট বিএনপির বিভক্তি

মহান বিজয় দিবসে  ‘সিলেট বিএনপি’র ব্যানারে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী। শনিবার সকালে
ছবি: প্রথম আলো

সিলেটে মহান বিজয় দিবসের কর্মসূচি পালনে বিএনপির বিভক্তি স্পষ্ট হয়েছে। আজ শনিবার সকালে শহীদ মিনারে জেলা ও মহানগর বিএনপির বাইরে সিলেটে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সিটির সাবেক মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী ‘সিলেট বিএনপি’র ব্যানারে পৃথকভাবে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এ নিয়ে দলের ভেতরে-বাইরে আলোচনা হচ্ছে।

দলীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নগরের কুমারপাড়া এলাকা থেকে বিজয় শোভাযাত্রা করে আরিফুলের নেতৃত্বাধীন বিএনপির নেতা-কর্মীরা নগরের চৌহাট্টা এলাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আসেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহক্ষুদ্র ও কুটিরশিল্প বিষয়ক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, সিলেট জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ, জেলা ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি ও সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর আলতাফ হোসেন সুমন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এদিকে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী ও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আশিক উদ্দিন আহমদের নেতৃত্বে জেলা বিএনপির কয়েক শ নেতা-কর্মী শোভাযাত্রা করে শহীদ মিনারে গিয়ে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে। এ ছাড়া মহানগর বিএনপির কর্মসূচিতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক ইমদাদ হোসেন চৌধুরী।

পৃথক কর্মসূচি পালন প্রসঙ্গে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এমরান আহমদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা ও মহানগর বিএনপি আলাদা দুটি ইউনিট হওয়ায় নেতা-কর্মীরা পৃথকভাবে কর্মসূচি পালন করেছেন। এর বাইরে তিনি (আরিফুল হক চৌধুরী) একটা কর্মসূচি পালন করেছেন বলে জেনেছি, এটা তাঁর একান্ত ব্যক্তিগত উদ্যোগ হয়তো। এর সঙ্গে জেলা ও মহানগর বিএনপি কোনো সম্পৃক্ততা নেই।’

মহান বিজয় দিবসে শহীদ মিনারে সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা। শনিবার সকালে

তবে আরিফুল হক চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘সিলেট বিএনপিতে কোনো বিভক্তি নেই। সিলেট বিএনপির অনেক নেতা-কর্মী বিজয় দিবসে শোভাযাত্রার পাশাপাশি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেছে। তাঁদের অনুরোধে আমিও এতে যোগ দিয়েছি। দলের সবাই এখন সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ। প্রচুরসংখ্যক নেতা-কর্মী বিজয় দিবসের কর্মসূচিতে একাত্ম হয়ে শোভাযাত্রা করে সরকারের বিরুদ্ধেই নিজেদের অবস্থান জানান দিয়েছে।’

স্থানীয় বিএনপির একাধিক নেতা-কর্মী জানান, সিলেটে বিএনপিতে বর্তমানে দুটি বলয় সক্রিয় আছে। এর একটি অংশের নেতৃত্বে আছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আবদুল মুক্তাদির। মূলত তাঁর নিয়ন্ত্রণেই জেলা ও মহানগর বিএনপির বেশির ভাগ নেতা-কর্মী আছেন। অন্যদিকে আরিফুল আরেকটি অংশের নেতৃত্বে আছেন। তাঁর সঙ্গে বিএনপির তৃণমূল পর্যায়ের অনেকে রয়েছেন। মাঝে কিছুদিন আরিফুল হক চৌধুরীকে প্রকাশ্যে দলীয় কোনো কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। এ নিয়ে নিজ দল ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের অভিযোগ ছিল। গত ৭ নভেম্বর মেয়রের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তরের পর ১৮ নভেম্বর প্রথম তিনি দলীয় কর্মসূচিতে প্রকাশ্যে অংশ নেন। এর পর থেকে তিনি দলের রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে সক্রিয় রয়েছেন।