জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলকারী ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস আটক করেছে। ওই পরিবহনের একটি বাস হঠাৎ ব্রেক (হার্ড ব্রেক) করায় পেছন থেকে ধাক্কা দেয় সাভার পরিবহনের একটি বাস। ঠিক তার পেছনে থাকা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীর প্রাইভেট কার সাভার পরিবহনের বাসটিতে ধাক্কা দিলে প্রাইভেট কারটির সামনের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়।
আজ শনিবার সকাল সোয়া নয়টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের সাভারের নিউমার্কেট এলাকায় আরিচাগামী লেনে এ ঘটনা ঘটে। পরে ভুক্তভোগী ছাত্রী ক্যাম্পাসে তাঁর বন্ধুদের জানালে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক-সংলগ্ন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের এক পাশে ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস আটক করেন।
ওই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ৪৭তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। ওই ছাত্রী ও তাঁর বন্ধুদের দাবি, সড়কে চলাচলের নিরাপত্তা এবং প্রাইভেট কারের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে ইতিহাস পরিবহন কর্তৃপক্ষকে। তারপর তাঁরা বাসগুলো ছাড়বেন।
আমাদের (ইতিহাস) একটি বাস হার্ড ব্রেক করছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কার ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু সেই বাস আটক না করে আমাদের বাসগুলো আটক করে রেখেছে। আমাদের যিনি চেকার আছেন, তাঁকে জানিয়েছি।তোফাজ্জল হোসেন, ইতিহাস পরিবহনের একটি বাসের চালক
ভুক্তভোগী ছাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, সকাল সোয়া নয়টার দিকে প্রাইভেট কারে করে ক্যাম্পাসে ফিরছিলেন তিনি। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রধান লেন দিয়ে প্রাইভেট কারটি চলছিল। সামনে সাভার পরিবহনের একটি বাস এবং তার সামনে ইতিহাস পরিবহনের একটি বাস চলছিল। সাভারের নিউমার্কেট এলাকায় এলে হঠাৎ করে ইতিহাস পরিবহনের বাসটি হার্ড ব্রেক করে। এতে পেছনে থাকা সাভার পরিবহনের বাস ধাক্কা দেয়। তার ঠিক পেছনে ওই ছাত্রীর প্রাইভেট কার ব্রেক করেও নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে সাভার পরিবহনে ধাক্কা মারে। এতে প্রাইভেট কারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ভুক্তভোগী ছাত্রী বলেন, ‘এত বড় একটি ঘটনা ঘটার পর পেছনে কেউ মারা গেল নাকি বেঁচে আছে, সেটি না দেখে বাসটি দ্রুত টান দিয়ে চলে যায়। এরপর আমার প্রাইভেট কারের চালক ইতিহাস পরিবহনের বাসে উঠে কেন এমন হার্ড ব্রেক করল, জানতে চাইলে বাসের চালক এবং সহযোগী খারাপ ব্যবহার করে হুমকি দিয়ে বাস থেকে নামিয়ে দেন। আমরা সড়কে চলাচলের নিরাপত্তা চাই।’
বেলা সোয়া ১১টার দিকে সরেজমিনে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক-সংলগ্ন সড়কের এক পাশে ইতিহাস পরিবহনের ৯টি বাস সারি সারি আটক করে রাখা হয়েছে। গাড়ির মধ্যে চালক-সহযোগীরা কেউ ঘুমাচ্ছেন, কেউ বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
ইতিহাস পরিবহনের আটক একটি বাসের চালক তোফাজ্জল হোসেন বলেন, ‘আমাদের (ইতিহাস) একটি বাস হার্ড ব্রেক করছে, তাই বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর প্রাইভেট কার ধাক্কা খেয়েছে। কিন্তু সেই বাস আটক না করে আমাদের বাসগুলো আটক করে রেখেছে। আমাদের যিনি চেকার আছেন, তাঁকে জানিয়েছি।’
ইতিহাস পরিবহনের চেকার মো. জসিম বলেন, ‘যে বাসটি হার্ড ব্রেক করেছে, সেটার নম্বর ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দিয়েছেন। আমরা ওই নির্দিষ্ট বাসটি শনাক্ত করার জন্য রোডে যাঁরা দায়িত্বে আছেন, তাঁদের বলেছি। ওই বাসের মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করে বিষয়টি সমাধান করব বলে ক্যাম্পাসে এসেছি। আমাদের একটি বাস আটক রেখে বাকিগুলো ছেড়ে দেওয়ার জন্য ছাত্রদের কাছে অনুরোধ জানিয়েছি।’
এ বিষয়ে কথা বলতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আলমগীর কবিরের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।