ছোট্ট ফুটফুটে শিশু। বয়স হবে দুই থেকে আড়াই বছর। শুয়ে আছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের বিছানায়। তাকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া প্রয়োজন। কিন্তু পাশে নেই কোনো স্বজন। চিকিৎসার জন্য অজ্ঞাতনামা শিশুটিকে ঢাকায় নেওয়ার কেউ নেই।
এর আগে বুধবার দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলার ড্যাপাকান্দি এলাকায় ভূঞাপুর-তারাকান্দি রেললাইনে ট্রেনের ধাক্কায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার তিন যাত্রী নিহত হন। আহত হন অপর পাঁচজন। আহত পাঁচজনের মধ্যে শিশুটিও আছে।
দুর্ঘটনার পর স্থানীয় লোকজন আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে ভূঞাপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। পরে আহত সবাইকে পাঠানো হয় টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে। টাঙ্গাইলে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর চিকিৎসকেরা উন্নত চিকিৎসার জন্য সবাইকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন। অন্য চারজনকে তাঁর স্বজনেরা ঢাকায় নিয়ে গেছেন। কিন্তু অজ্ঞাত শিশুটি এখনো রয়ে গেছে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে। সে হাসপাতালটির ৭ নম্বর ওয়ার্ডে এখনো চিকিৎসাধীন।
এ বিষয়ে ভূঞাপুর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর সাহেরা বেগম বলেন, দুর্ঘটনার পর ভূঞাপুর থেকে যখন তাঁদের টাঙ্গাইল হাসপাতালে আনা হয়, তখন কারও পরিচয় জানা ছিল না। এক এক করে চারজনের পরিচয় মেলে। কিন্তু শিশুটির পরিচয় পাওয়া যাচ্ছে না। তাই তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়া হচ্ছে না। ছোট্ট অবুঝ শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাবে কে?
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক পার্থ প্রতিম সাহা বলেন, শিশুটির মাথায় আঘাত লেগেছে। রক্তক্ষরণ হয়েছে। জরুরি ভিত্তিতে তাকে ঢাকায় নেওয়া প্রয়োজন। তাঁদের পক্ষে যতটুকু সম্ভব চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ওয়ার্ডটিতে কর্তব্যরত নার্স জ্যোৎস্না খাতুন বলেন, শিশুটিকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছে। তার কোনো স্বজন না থাকায় তাঁরাই (নার্স) শিশুটিকে সেবা দিচ্ছেন।