ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় লাইনচ্যুত হওয়ার সাড়ে ১০ ঘণ্টা পর মালবাহী কনটেইনার ট্রেনের লাইনচ্যুত বগিটি উদ্ধার করা হয়েছে। রোববার সন্ধ্যা সাতটার দিকে বগির পেছনের চারটি চাকা লাইনে তোলা হয়েছে। তবে রেলস্টেশনের ঢাকামুখী আপলাইন সন্ধ্যা সাড়ে সাতটা পর্যন্তও স্বাভাবিক হয়নি। এটি স্বাভাবিক হতে আরও সময় লাগবে বলে স্টেশনমাস্টার জানিয়েছেন। তবে ডাউনলাইন দিয়ে সব ট্রেন বিলম্বে চলাচল করছে।
এদিকে বগি লাইনচ্যুত হওয়ার সাড়ে ৯ ঘণ্টা পর সন্ধ্যা ছয়টার দিকে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। ৪০০ মিটার রেললাইন ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় উদ্ধারকারী ট্রেন পৌঁছাতে বিলম্ব হয়েছে বলে রেলের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
আখাউড়া রেলওয়ে জংশনের ঊর্ধ্বতন উপসহকারী প্রকৌশলী (পথ) মনিরুল ইসলাম সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মুঠোফোনে বলেন, মালবাহী ট্রেনের চারটি চাকা লাইনচ্যুত হওয়ায় ৪০০ মিটার রেললাইন এবং ৩০০ মিটার স্লিপার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ ছাড়া ৯৮-১০০টি স্লিপার ভেঙে গেছে। নতুন করে স্লিপার লাগিয়ে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনের মেরামতকাজ শেষ হয়েছে। এরপর উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন স্টেশনে পৌঁছায়। এরপর লাইনচ্যুত হওয়া বগি উদ্ধার করা হয়েছে।
এদিকে লাইনচ্যুত হওয়ায় রেলওয়ের ঢাকার সহকারী পরিবহন কর্মকর্তা-১ (এটিও) সাজেদুল ইসলামকে প্রধান করে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন ঢাকা রেলওয়ের সহকারী সংকেত প্রকৌশলী ও সহকারী মেকানিক্যাল প্রকৌশলী (অপারেশন) এবং আখাউড়া রেলওয়ের সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী মেহেদী হাসান আহমেদ।
স্থানীয় লোকজন ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রাম থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী মালবাহী একটি কনটেইনার ট্রেন সকাল সোয়া আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার পাঘাচং রেলস্টেশন অতিক্রম করে। সকাল সাড়ে আটটার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের লেভেল ক্রসিং এলাকার পূর্ব দিকের আউটারে কলেজপাড়া এলাকায় পৌঁছালে মালবাহী কনটেইনার ট্রেনের ৩১ নম্বর বগির পেছনের চারটি চাকা লাইনচ্যুত হয়। স্লিপার ঘেঁষে ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের দিকে এগিয়ে যায়।
পরে লোকোমোটিভ মাস্টার মোহাম্মদ নুরুন নবী রেলস্টেশনে ট্রেন থামান। এ সময় রেললাইনের অনেক স্লিপার ভেঙে যায় এবং ফিশপ্লেট ও ক্লিপ সরে রেললাইন বেঁকে গেছে। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে আখাউড়া রেলওয়ে সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী লোকজন নিয়ে উদ্ধারকাজ শুরু করেন। বেলা দুইটার দিকে তদন্ত কমিটির সদস্যরা ঢাকা থেকে এসে ঘটনাস্থলে পৌঁছান।
তদন্ত কমিটির প্রধান সাজেদুল ইসলাম বলেন, কী ত্রুটি হয়েছে, সেটি বোঝার চেষ্টা করছেন। সবকিছু দেখবেন, চাকার রিডিং নেবেন, স্থানীয় লোকজনের বক্তব্য নেবেন। এরপর বোঝা যাবে, কী কারণে দুর্ঘটনা হয়েছে। তিন কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের ভারপ্রাপ্ত মাস্টার জসিম বলেন, সন্ধ্যা ৭টা ৫ মিনিট সময়ে লাইনচ্যুত বগির পেছনের চারটি চাকা উদ্ধার করা হয়। লাইনে লাইনচ্যুত হওয়া মালবাহী কনটেইনার ট্রেন এবং আরেকটি লাইনে উদ্ধারকারী রিলিফ ট্রেন অবস্থান করছে। আপলাইন স্বাভাবিক হতে আরও অনেক সময় লাগবে।