কুষ্টিয়ায় আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কুষ্টিয়া-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মাহবুব উল আলম হানিফের বিরুদ্ধে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে মামলা হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কুমারখালী উপজেলার ঘোরাই গ্রামের লুৎফুর রহমানের ছেলে জিলহজ হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় মামলাটি করেন। এতে আওয়ামী লীগের ৭৩ জনের নাম উল্লেখ করে ও অজ্ঞাতনামা ৪০-৪৫ জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার পর আওয়ামী লীগের নেতা ও পৌরসভার তিনজন কাউন্সিলরকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গতকাল বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে কুষ্টিয়া পৌরসভা থেকে তাঁদের আটক করে রাত ১১টার দিকে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হস্তান্তর করে র্যাব। রাতেই গণমাধ্যমে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারের এ তথ্য জানায় র্যাব।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন কুষ্টিয়া পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সাইফ উল হক ওরফে মুরাদ হোসেন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম ও ১১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর আনিস কুরাইশী। তিনজনই নিজ নিজ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।
কুষ্টিয়া মডেল থানা সূত্রে জানা গেছে, গতকাল বিকেল সোয়া তিনটার দিকে কুমারখালীর ঘোরাই গ্রামের জিলহজ হোসেন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় হত্যাচেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন। মামলার এজাহারে তিনি উল্লেখ করেছেন, গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে বাদীর ছোট ভাই তামজিদ হোসেন আন্দোলনে অংশ নেন। বিকেলে কুষ্টিয়া মডেল থানার সামনে বার্মিজগলিতে আসামিরা তাঁকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে আওয়ামী লীগ নেতা মাহবুব উল আলম হানিফের নির্দেশে অন্য আসামিরা তাঁকে এলোপাতাড়ি কোপায়। হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে রড ও লাঠি দিয়ে বিভিন্ন স্থানে এলোপাতাড়ি মারধর করে গুরুতর জখম করেন। গুলি করতে থাকে। তাঁদের ছোড়া গুলি তাঁর বাঁ পায়ে লাগে। এরপর ঘটনাস্থলে থেকে তাঁকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়।
মামলায় আসামিদের মধ্যে আছেন হানিফের চাচাতো ভাই কুষ্টিয়া শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আতিকুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক শেখ হাফিজ, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক জিয়াউল হক, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ইয়াসির আরাফাত, সাধারণ সম্পাদক মানব চাকী, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাদ আহমেদ, আওয়ামী লীগ নেতা মোমিনুর রহমান প্রমুখ।
গতকাল রাতে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে কুষ্টিয়া র্যাব ক্যাম্পের কমান্ডার মোহাম্মদ ইলিয়াস খান বলেন, গতকাল বিকেলে কুষ্টিয়া পৌরসভার সামনে অভিযান চালিয়ে তিনজন কাউন্সিলরকে আটক করা হয়। তাঁরা বিকেলে মডেল থানায় দায়ের হওয়া একটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি। রাতেই তাঁদের থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুল হক চৌধুরী বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের আজ শুক্রবার যেকোনো সময় আদালতে পাঠানো হবে।