ফরিদপুরের ভাঙ্গা স্টেশন থেকে পদ্মা সেতুর উদ্দেশে একটি বিশেষ ট্রেন যাত্রা শুরু করেছে। আজ মঙ্গলবার বেলা ১টা ২১ মিনিটে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলামকে নিয়ে ভাঙ্গা থেকে পদ্মা সেতুর উদ্দেশে পরীক্ষামূলকভাবে সাত বগির ট্রেনটি ছেড়ে যায়। ট্রেনটির গন্তব্য পদ্মা সেতু পার হয়ে মাওয়া রেলস্টেশন।
যাত্রা শুরুর আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রেলমন্ত্রী নূরুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রী এক এক করে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়ন করে যাচ্ছেন। তারই অংশ হিসেবে আজ পরীক্ষামূলকভাবে পদ্মা সেতুতে ট্রেন চলছে। আগামী সেপ্টেম্বরে ভাঙ্গা থেকে ঢাকা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল করবে। ওই অনুষ্ঠান উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর ভাঙ্গা থেকে যশোর পর্যন্ত রেললাইন যাবে। এর জন্য ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।
পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্পের মাওয়া-ভাঙ্গা অংশের প্রকল্প ব্যবস্থাপক ব্রিগেডিয়ার সাঈদ আহম্মেদ বলেন, ‘প্রকল্পের কাজ শুরু করতে আমাদের তিন মাস দেরি হয়েছিল। তারপরও সময়মতো কাজ শেষ করতে পারায় আমরা আনন্দিত। ইতিমধ্যে আমাদের এই অংশের কাজের ৯২ ভাগ শেষ হয়েছে। বাকি কাজ প্রকল্পের মেয়াদের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে।’
এ সময় রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলামের পাশাপাশি সেখানে উপস্থিত ছিলেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক, চিফ হুইপ নুর-ই-আলম চৌধুরী, সংসদ সদস্য মজিবুর রহমান চৌধুরী, ইকবাল হোসেন ও সাগুফতা ইয়াসমিন, আবদুস সোবহান, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক কামরুল আহসান তালুকদার ও পুলিশ সুপার মো. শাহজাহান।
পদ্মা অতিক্রম করে প্রথম ট্রেনটি চালিয়ে নিয়ে যাবেন রবিউল আলম (৪৩)। এর আগে গতকাল সোমবার রাতে বিশেষ ট্রেনটি সৈয়দপুর থেকে ঈশ্বরদী, পোড়াদাহ, রাজবাড়ী ও ফরিদপুর হয়ে ভাঙ্গা স্টেশনে আসে।
রবিউল আলম বলেন, পদ্মা সেতুতে প্রথম ট্রেন চালাচ্ছেন তিনি। এ কথা ভাবতেই শিহরিত হয়ে উঠছেন তিনি। এক সপ্তাহ আগে তিনি যখন ঘটনাটি জানতে পারেন, তখন থেকেই এই দিনের অপেক্ষায় ছিলেন তিনি।
পদ্মা সেতুর রেললিংক প্রকল্প সূত্র জানায়, যাত্রীদের ট্রেনে চলাচলের জন্য ভাঙ্গা হতে পদ্মা সেতু হয়ে মাওয়া পর্যন্ত ৪২ কিলোমিটার রেলপথ প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্মাণ করা হচ্ছে চারটি স্টেশন ও একটি জংশন। স্টেশনগুলো হলো—ভাঙ্গা স্টেশন, ভাঙ্গা জংশন স্টেশন, শিবচর স্টেশন, পদ্মা স্টেশন ও মাওয়া স্টেশন। ৪২ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করতে ট্রেনটির সময় লাগবে দুই ঘণ্টা। পরীক্ষামূলক ট্রেন চলাচলের জন্য পাঁচটি স্টেশন সাজানো হয়েছে।