ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলায় আগুনে পুড়ে যাওয়া দুই শিশু ইয়াসিন মুন্সী (৩) ও ইসমাইল মুন্সী (৪) মারা গেছে। গতকাল রোববার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজসংলগ্ন বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় তারা।
গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙ্গা উপজেলার ঘারুয়া ইউনিয়নের রশিবপুরা গ্রামে অগ্নিকাণ্ডে শিশু দুটি দগ্ধ হয়। আগুনে শিশু ইসমাইল মুন্সীর শরীরের ৯০ ভাগ এবং ইয়াসিন মুন্সীর শরীরের ৬৮ ভাগ পুড়ে যায়। ইয়াসিন মুন্সীর বাবা কৃষক আসাদ মুন্সী এবং ইসমাইল মুন্সীর বাবা কৃষক সিদ্দিক মুন্সী। আসাদ মুন্সী ও সিদ্দিক মুন্সী পরস্পর চাচাতো ভাই।
শিশু দুটির মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন রশিবপুরা গ্রামের বাসিন্দা ও স্থানীয় দাখিল মাদ্রাসার সুপার মো. ইদ্রিস আলী। তিনি বলেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশু দুটি মারা যায়। এর মধ্যে ইসমাইল মুন্সী মারা যায় গতকাল রাত ৯টার দিকে। আর গতকাল দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে মারা যায় অগ্নিদগ্ধ অপর শিশু ইয়াসিন মুন্সী।
অগ্নিদগ্ধ শিশুদের চাচা উজ্জ্বল হোসেন বলেন, গতকাল সকালে বাড়িতে কেউ না থাকায় ইয়াসিন ও ইসমাইল রান্নাঘরে খেলতে থাকে। এ সময় ঘরে অন্য কেউ ছিল না। একপর্যায়ে তারা চুলায় আগুন জ্বালায়। মুহূর্তেই আগুনের শিখা পাটকাঠির বেড়ায় লেগে দাউ দাউ করে জ্বলতে থাকে। তখন তারা ভয় পেয়ে ঘরের পাশে গোসলখানায় গিয়ে লুকায়। এদিকে আগুনের শিখা রান্নাঘরের পাশে গোসলখানার বেড়ায় ও লেগে যায়। আগুনের লেলিহান শিখা দেখে এলাকাবাসী আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তাঁরা তখনো জানতেন না, শিশু দুটি গোসলখানার ভেতরে আছে। একপর্যায়ে ইয়াসিনের মা কিস্তির টাকা জমা দিয়ে বাড়িতে ফিরে এসে সন্তানদের খুঁজতে থাকেন। তিনি গোসলখানায় গিয়ে শিশু দুটিকে অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় দেখতে পান।
পরে এলাকাবাসী শিশু দুটিকে উদ্ধার করে ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশু দুটির অবস্থা গুরুতর হওয়ায় দ্রুত তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসংলগ্ন বার্ন ইউনিটে স্থানান্তর করেন।
ভাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মৌলি চৌধুরী বলেন, অগ্নিদগ্ধ ইয়াসিনের শরীরের ৬৮ ভাগ এবং ইসমাইলের শরীরের ৯০ ভাগ পুড়ে যায়।