দিনাজপুরের নবাবগঞ্জে দিনাজপুর-৬ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিবলী সাদিকের বিরুদ্ধে জোর করে জমি লিখে নিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা করেছিলেন শাহাবুল আলম নামের এক যুবক। তাঁর পরিবারের অভিযোগ, এর জেরে বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যান আসামিপক্ষের লোকজন। গতকাল বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে কুচদহ ইউনিয়নের শিবপুর ঘোনাপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। মামলা থেকে কয়েকজনের নাম বাদ দেওয়ার শর্তে ওই ব্যক্তিকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সাবেক সংসদ সদস্য শিবলী সাদিক, তাঁর ছোট ভাই ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তাজওয়ার মোহাম্মদ ফাহিম ওরফে নাইন্টি, তাঁদের চাচা ও সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান দেলওয়ার হোসেনসহ ৪০ জনের নাম উল্লেখ করে ২ ডিসেম্বর নবাবগঞ্জ থানায় মামলাটি করেছিলেন শাহাবুল। এতে ১০০ থেকে ১২০ জন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকেও আসামি করা হয়।
শাহাবুলের ছোট বোন মারজিনা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘শাহাবুল ভাই যার যার নামে কেস করিছিল, সেই মানুষগুলা তাকে (শাহাবুল) ধরে নিয়া গেইছে। বিকেল পাঁচটার সময় রবিউল, মোতালেব, বাবু, আলমাসসহ আরও ৪০–৪৫ জন মানুষের নাম তো দেওয়া (এজাহারে) আছে, তারা সব মানুষই আসছিল আমাদের বাসায়। আসিয়া তারা বলছে, “আমরা কি আপনাদের জমির মালিক? তো আমাদের ওপর আপনারা কেস করিছেন?” আমার ভাই কওছে, “না, তোমরা তো হামার জমির মালিক নয়।” পরে তারা ভাইকে ধরে নিয়ে গেইছে।’
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত ১৭ আগস্ট রাত আনুমানিক ৮টার দিকে আসামিরা লাঠি, রড ও ধারালো অস্ত্র নিয়ে বাদীর বসতবাড়িতে যান। এ সময় তাঁরা মামলার বাদী শাহাবুল, তাঁর নানা ও জমির মালিক আবদুল বাকি, বড় ভাই রহিমুজ্জামান, মা রমিজা খাতুন, ছোট বোন মাছুমা খাতুন ও মারজিনা খাতুনকে টেনেহিঁচড়ে বাড়ি থেকে স্বপ্নপুরী বিনোদনকেন্দ্রে নিয়ে যান। সেখানে একটি অফিসকক্ষে তাঁদের আটকে রেখে কয়েকটি নন-জুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নিয়ে ১ একর ২২ শতাংশ জমি লিখে নেন। এরপর ওই জমি ছেড়ে দিয়ে অন্যত্র চলে যাওয়ার হুমকি দেন। তবে জমির মূল্য বাবদ আসামিরা কোনো অর্থ দেননি। পরদিন ১৮ আগস্ট সকালে আসামিরা ওই জমি থেকে বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ৪ হাজার ৬০০টি গাছ কেটে নিয়ে যান।
এদিকে পুলিশ বলছে, বাদীকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া তথ্যটি সঠিক নয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার উপপরিদর্শক বেলাল হোসেন বলেন, ‘বাদীর সঙ্গে মামলার ব্যাপারে কথা বলার জন্য থানায় ডেকেছিলাম। বাদীর সঙ্গে কথা হয়েছে। উনি পরে চলে গেছেন, এতটুকুই। মামলার আসামিরা বাদীকে বাড়ি থেকে ধরে এনেছেন, এ তথ্য সঠিক নয়।’