দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী ও বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মোল্লার ওপর হামলা হয়েছে। এ সময় নির্বাচনী কাজে ব্যবহৃত তাঁর গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। এতে জিয়াউল হকসহ তিনজন আহত হয়েছেন।
গতকাল সোমবার বিকেল পাঁচটার দিকে বগুড়ার কাহালু উপজেলার তিনদীঘি এলাকায় গণসংযোগকালে এ হামলার ঘটনা ঘটে। আহত দুজন হলেন তাঁর কর্মী মাসুদ ও হাসান।
আহত মাসুদ বলেন, তাঁরা একটি মাইক্রোবাসে বিকেল পাঁচটার দিকে কাহালু উপজেলার তিনদীঘি বাজার এলাকায় যান। সেখানে মাইক্রোবাস থেকে নামার সময় শাকিল, গফুর ও সবুজের নেতৃত্বে ২০-২৫ যুবক লাঠিসোঁটা নিয়ে হামলা চালান। তাঁরা মাইক্রোবাস ভাঙচুর করেন। জিয়াউল হককে হত্যার চেষ্টা চালান হামলাকারীরা।
জিয়াউল হক মোল্লা বলেন, ‘বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশারফ হোসেনের ক্যাডার বাহিনী আমাকে হত্যার জন্য হামলা চালিয়েছে। এ হামলা করে আমাকে নির্বাচনী কার্যক্রম থেকে সরানো যাবে না।’
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকতা সেলিম রেজা বলেন, স্বতন্ত্র প্রার্থী জিয়াউল হক থানায় ভাঙা গাড়ি নিয়ে আসেন। তিনি মৌখিক অভিযোগ দিয়েছেন। লিখিত অভিযোগ দেবেন বলে জানিয়েছেন। বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ।
স্থানীয় বিএনপি সূত্রে জানা যায়, জিয়াউল হক মোল্লার বাবা আজিজুল হক মোল্লা বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ছিলেন। তিনি ১৯৭৯ ও ১৯৯১ সালের নির্বাচনে বগুড়া-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ১৯৯৩ সালে তিনি মারা গেলে এই আসনে উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে জিয়াউল হক মোল্লা বিএনপির মনোনয়নে বিজয়ী হন। ১৯৯৬ ও ২০০১ সালের নির্বাচনেও বিএনপির মনোনয়নে তিনি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে দলটির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। ২০০৭ সালে এক-এগারোতে সেনাসমর্থিত সরকার ক্ষমতায় আসার পর বিএনপির তৎকালীন মহাসচিব আবদুল মান্নান ভূঁইয়ার নেতৃত্বে দলে সংস্কারের দাবিতে সোচ্চার হন জিয়াউল হক মোল্লাসহ কয়েকজন। সেই থেকে তিনি বিএনপিতে ‘সংস্কারপন্থী’ হিসেবে পরিচিতি পান। ২০০৮ সালের নির্বাচনে তাঁকে বাদ দিয়ে মোস্তফা আলীকে দলীয় মনোনয়ন দেয় বিএনপি। একই কারণে ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি মনোনয়ন পাননি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে দলের মনোনয়ন পাওয়া খসড়া তালিকায় তাঁর নাম ছিল। তবে শেষ পর্যন্ত তাঁর বদলে মোশারফ হোসেনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়।