ঢাকার রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে হামলার মামলায় কারাবন্দী বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি মজিবর রহমান সরোয়ার জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। তিন মাসের বেশি সময় কারাভোগের পর গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরে বের হন। এ সময় তাঁর সমর্থক ও নেতা-কর্মীরা তাঁকে কারাফটকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন।
শুক্রবার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন মজিবর রহমান সরোয়ারের ঘনিষ্ঠ অনুসারী ও বরিশাল মহানগর বিএনপির সাবেক সহসাধারণ সম্পাদক আনোয়ারুল হক। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মজিবর রহমান বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরপর তাঁকে ফুল দিয়ে বরণ করেন নেতা-কর্মীরা। তিনি সুস্থ আছেন। তবে দীর্ঘদিন কারাগারে থাকায় কয়েক দিন বিশ্রামে থাকবেন তিনি।
বিএনপি নেতাদের ভাষ্য, মজিবর রহমান সরোয়ার গত বছরের ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে ডাকা বিএনপির মহাসমাবেশে যোগ দেন। মহাসমাবেশ চলাকালে পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেটে বিদ্ধ হন কয়েকজন নেতা-কর্মী। পুলিশের ছোড়া তিনটি রাবার বুলেট মজিবর রহমান সরোয়ারের গায়ে বিদ্ধ হয়। এ সময় তিনি লুটিয়ে পড়েন। সঙ্গে থাকা নেতা-কর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে ভর্তি করেন। ২ নভেম্বর দিবাগত রাত সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকার মোহাম্মদপুরের তাঁর এক স্বজনের বাসা থেকে মজিবর রহমান সরোয়াকে আটক করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। পরে রাজারবাগ পুলিশ লাইনসে হামলার মামলার আসামি করে তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। এর পর থেকে তিনি গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগারে বন্দী ছিলেন। উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার রাতে তিনি কারাগার থেকে মুক্তি পেয়ে বাইরে আসেন।
২০ বছর ধরে বরিশাল মহানগর বিএনপির সভাপতি ছিলেন মজিবর রহমান সরোয়ার। তিনি বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রথম মেয়র, বরিশাল সদর আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ ছিলেন। ২০২১ সালের ৩ নভেম্বর বরিশাল মহানগরের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ভেঙে দিয়ে আহ্বায়ক কমিটির অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় বিএনপি। নেতৃত্ব পান তাঁর বিরোধী হিসেবে পরিচিত নেতারা। এরপর বরিশালের রাজনীতিতে দীর্ঘদিন অনুপস্থিত ছিলেন মজিবর রহমান। তাঁর পক্ষের নেতারাও বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান না পেয়ে কোণঠাসা অবস্থায় আছেন।