গতকাল শুক্রবার রাত ১০টার দিকে মারা যান আবদুল হাকিম (২৯)। আজ শনিবার সকাল ১০টায় তাঁর জানাজা শেষে তাঁকে দাফন করা হয়। লোকজন তাঁকে দাফন করে বাড়িতে গিয়ে শোনেন হাকিমের মা ছেনুয়ারা বেগম (৪৯) মারা গেছেন। ঘটনাটি ঘটেছে কক্সবাজারের পেকুয়া উপজেলার শিলখালী ইউনিয়নের ছৈয়দনগর গ্রামে।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা বলেন, হাকিম এক বছর ধরে পিত্তথলির ক্যানসারে ভুগছিলেন। তিনি পেশায় গাড়িচালক। পরিবারে উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তিনি। চিকিৎসার অভাবে গতকাল রাতে তিনি মারা যান। একই সময়ে ছেনুয়ারা বেগমেরও লিভার ক্যানসার ধরা পড়ে। তিনিও টাকার অভাবে চিকিৎসা পাননি।
হাকিমের দুই সন্তান। বড় সন্তান আঁখি মনির বয়স ৪ বছর ও ছোট সন্তান আবদুর রহমানের বয়স মাত্র ৬ মাস। তাঁর স্ত্রী নাছিমা আক্তার (২৫) অঝোরে কাঁদছেন। মুঠোফোনে তিনি বলেন, ‘ক্যানসার আমার সংসার তছনছ করে দিয়েছে। ছোট ছোট দুই মাসুম বাচ্চা নিয়ে কোথায় ঠাঁই নেব, বুঝে উঠতে পারছি না। গাড়ি না চালালেও স্বামী ছিলেন মাথার ছায়া। আজ তিনি নেই, আমার কিছু নেই। এক বাড়ির ছাদ থেকে একদিনে দুজন মানুষকে আল্লাহ নিয়ে গেছেন। এই শোক সইতে পারছি না।’
হাকিমের বাবা বদর শফিও অন্তত ১৫ বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। হাকিমের বড় এক ভাই ও এক বোন রয়েছে। এর মধ্যে বড় বোন রোকেয়ার স্বামীও চার বছর আগে ক্যানসারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। বড় ভাই নুরুল হাকিম একটি পোলট্রি ফার্মে চাকরি করেন।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘পুরো এলাকা শোকে স্তব্ধ হয়ে গেছে। অনেকভাবে বিভিন্নজনের কাছ থেকে টাকা তুলে তাঁদের চিকিৎসা করিয়েছিলাম আমরা। তবে তা যথেষ্ট ছিল না। এখন হাকিমের মাকে দাফন–কাফনের প্রস্তুতি চলছে। বিকেল সাড়ে চারটায় তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে।’
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মোহাম্মদ হাসান বলেন, ‘এক ঘরের দুজন মানুষ একই রোগে মারা গেছে, সেটা কেউ মেনে নিতে পারছে না। এখন আপনারা হাকিমের ছোট বাচ্চাদের জন্য কিছু একটা করেন।’