টাঙ্গাইল জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান খান (৮০) আজ শনিবার সকালে মারা গেছেন। শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর থেকে তিনি আত্মগোপনে ছিলেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীদের মিছিলে হামলা, গুলির ঘটনাসহ টাঙ্গাইল থানায় করা দুটি মামলায় তাঁকে আসামি করা হয়েছিল।
ফজলুর রহমান খানের ভাগনে এলেন মল্লিক জানান, তিনি বার্ধক্যজনিত নানা রোগে আক্রান্ত ছিলেন। রাজধানী ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। কয়েক দিন আগে তাঁকে টাঙ্গাইল শহরের থানাপাড়া এলাকার নিজ বাসায় আনা হয়। পরে আজ সকালে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন কর্তব্যরত চিকিৎসক। আজ বিকেলে টাঙ্গাইল গোরস্তান জামিয়া ইসলামিয়া দারুস সুন্নাহ মাদ্রাসা মাঠে জানাজা শেষে তাঁকে কেন্দ্রীয় গোরস্তানে দাফন করার কথা আছে।
কয়েক দফা সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর ফজলুর রহমান খান ২০১৫ সালে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হন। আর ২০১০ সালে জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পান। পরে দুই দফা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য ২০২১ সালে একুশে পদক লাভ করেন।
ফজলুর রহমান খান ১৯৪৪ সালের ১২ অক্টোবর মির্জাপুর উপজেলার কহেলা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। ১৯৬০ সালে ছাত্রলীগের মাধ্যমে রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে গণপরিষদ সদস্য নির্বচিত হন। পরে ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টাঙ্গাইল-৭ (মির্জাপুর) আসন থেকে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বচিত হন। তাঁর ছেলে খান আহমেদ শুভ বর্তমানে জেলা আওয়ামী লীগের সংগঠনিক সম্পাদক ও টাঙ্গাইল ৭ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য।
ফজলুর রহমানের বিরুদ্ধে মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে পুলিশ। সংস্থাটি জানায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র–জনতার আন্দোলনে গত ৪ আগস্ট টাঙ্গাইল শহরের বটতলা এলাকায় মিছিলে গুলি ও হামলার ঘটনা ঘটে। এ হামলায় আহত এক ব্যক্তি বাদী হয়ে ৩১ আগস্ট টাঙ্গাইল সদর থানায় মামলা করেন। এতে ফজলুর রহমান খানকে প্রধান আসামি করা হয়। এ ছাড়া টাঙ্গাইলে মাওলানা ভাসানীর কবরে শ্রদ্ধা জানাতে এসে ২০২১ সালের ১৭ নভেম্বর গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক হামলার শিকার হন। এ ঘটনায় গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক শাকিল উজ্জামান বাদী হয়ে গত ১ সেপ্টেম্বর টাঙ্গাইল সদর থানায় আরও একটি মামলা করেছিলেন। এ মামলায়ও ফজলুর রহমানকে আসামি করা হয়।