বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের ‘অযোগ্য কমিটি’ বাতিলের দাবিতে পদবঞ্চিত নেতা-কর্মীরা লাগাতার আন্দোলনের ঘোষণা দিয়ে আবার বিক্ষোভ করেছেন। দুই দিন সময় বেঁধে দেওয়ার পরও কমিটি বাতিল না হওয়ায় মঙ্গলবার সন্ধ্যায় শহরে বিক্ষোভ করেন ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত নেতা ও তাঁদের সমর্থকেরা। পরে তাঁরা সাতমাথায় টেম্পল সড়কে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ করেন।
বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা ছাত্রলীগে সভাপতি পদপ্রত্যাশী ও সদ্য ঘোষিত কমিটির সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান সমর্থিত বিভিন্ন ইউনিটের নেতারা বক্তব্য দেন।
সমাবেশ থেকে অযোগ্য, অছাত্র, ব্যবসায়ী, মাদক মামলার আসামি, বহিরাগত ও জেলা ছাত্রলীগের কর্মসূচিতে কোনো দিন অংশ নেননি, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে ঘোষিত ছাত্রলীগের বিতর্কিত কমিটি বাতিলের দাবি জানানো হয়। ‘অযোগ্য কমিটি’ বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবে বলেও ঘোষণা দেওয়া হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সদর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. ওবাইদুল্লাহ সরকার। এটি সঞ্চালনা করেন শহর ছাত্রলীগের সভাপতি সুজিত কুমার দাস। এতে সরকারি শাহ সুলতান কলেজ শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাব্বী, গাবতলী উপজেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর, ছাত্রলীগ নেতা সিদ্ধার্থ কুমার দাস, নূর মোহাম্মদ, রাকিব হাসান, মিনহাজুল ইসলাম, আহসান হাবিব, মিল্লাত হোসেন, মাহমুদুল বারী, সাদিকুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সভাপতি পদপ্রত্যাশী তৌহিদুর রহমান মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বলেন, দুই দিন পেরিয়ে গেলেও কমিটি বাতিল না হওয়ায় আবারও আন্দোলন কর্মসূচি শুরু হয়েছে। প্রতিদিন সন্ধ্যায় ধারাবাহিক এ কর্মসূচি চলবে।
এর আগে গত শুক্রবার শহরের সাতমাথায় ৩০ গজের মধ্যে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত এবং পদ পাওয়া অংশ পাল্টাপাল্টি সমাবেশ করে। জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে পদবঞ্চিত অংশের সমাবেশ চলাকালে পাশে মুজিব মঞ্চে নতুন কমিটির অভিষেক হয়। উভয় পক্ষের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে পুলিশ মাঝে অবস্থান নেয়। মুজিব মঞ্চে নতুন কমিটির অভিষেক অনুষ্ঠানে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মজিবর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক রাগেবুল আহসান বক্তব্য দেন।
অন্যদিকে পদবঞ্চিত অংশের কর্মসূচির সঙ্গে একাত্মতা ঘোষণা করে জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মঞ্জুরুল আলম বক্তব্য দেন। তখন তিনি বলেছিলেন, ‘অছাত্র, ব্যবসায়ী, সংগঠনের কর্মসূচিতে কোনো দিন অংশ নেননি, এমন ব্যক্তিদের নিয়ে ঘোষিত ছাত্রলীগের বিতর্কিত এ কমিটি কোনোভাবেই মানব না। দুই দিনের মধ্যে বিতর্কিত কমিটি বাতিল না হলে লাগাতার আন্দোলন কর্মসূচি চলবে। সেই পর্যন্ত আন্দোলন স্থগিত থাকবে।’
এর আগে ৭ নভেম্বর বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ। সম্মেলন ছাড়াই সাত বছর পর ঘোষিত এ কমিটিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ৩০ জনের নাম আছে। কমিটি ঘোষণার পরপরই শহরের টেম্পল সড়কে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে জড়ো হন পদবঞ্চিত ও প্রত্যাশিত পদ না পাওয়া নেতা-কর্মীরা। ওই ভবনে ছাত্রলীগসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সব সংগঠনের কার্যালয়। বিক্ষুব্ধ নেতা–কর্মীরা কমিটি প্রত্যাখ্যান করে ওই ভবনের ফটকে তালা লাগিয়ে দেন।
জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে টানা চার দিন বিক্ষোভের পর গত বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের তালা খুলে দিয়ে শুধু ছাত্রলীগের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন পদবঞ্চিত নেতারা।