জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের নেতা শামীম খন্দকার ও তাঁর সহযোগীরা স্থানীয় সাংবাদিক গোলাম রাব্বানীকে মারধর করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। ভুক্তভোগী ওই সাংবাদিক থানায় এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার মধ্যবাজার এলাকায় তাঁকে মারধরের ঘটনা ঘটে।
অভিযুক্ত শামীম খন্দকার বকশীগঞ্জ উপজেলা যুবলীগের সদস্য। তাঁর সহযোগীরা হলেন পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য স্বপন মণ্ডল ও যুবলীগের কর্মী শেখ ফরিদ।
নির্যাতনের শিকার সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর ডটকমের জেলা প্রতিনিধি ও একাত্তর টিভির বকশীগঞ্জ উপজেলা প্রতিনিধি। মঙ্গলবার রাতে আহত অবস্থায় উপজেলা মধ্যবাজার এলাকা থেকে গোলাম রাব্বানীকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানী প্রথম আলোকে বলেন, ‘উপজেলার খাইরুল ইসলাম নামের এক যুবক প্রায়ই ফেসবুকে সাংবাদিকদের নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করেন। মঙ্গলবার ওই যুবককে আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, সাংবাদিকেরা তোমাকে কী করছে, তুমি সব সময় সাংবাদিকদের নিয়ে খারাপ মন্তব্য করো। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই ওই যুবক আমাকে নিয়ে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দেয়। বিষয়টি আমি দেখে মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে ওই যুবকের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিই। রাত ১০টার দিকে উপজেলার মধ্যবাজারে আমি দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় ওই যুবক আমাকে নানা বিষয়ে জিজ্ঞেস করে। উত্তর দেওয়ার পর ওই যুবক চলে যায়। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই যুবলীগের নেতা শামীম খন্দকার, স্বপন মণ্ডল ও শেখ ফরিদ আসেন। কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাঁরা আমাকে মারধর শুরু করেন। মারছিলেন, আর বলছিলেন, “তুই ছাড়া আর কোনো সাংবাদিক নাই, তুই এত নিউজ করস কেন? তোর হাত-পা কেটে দেব।” এ সময় আমার চিৎকার শুনে স্থানীয় লোকজন এসে আমাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।’
এ ঘটনায় আজ বুধবার দুপুরে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গোলাম রাব্বানী। তিনি বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ দেওয়ার পর থেকে তাঁরা আমাকে নানাভাবে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছেন।’
এই ঘটনায় খাইরুল ইসলাম বাদী হয়ে সাংবাদিক গোলাম রাব্বানীকে আসামি করে থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। খাইরুল ইসলাম ওই লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, মঙ্গলবার রাতে গোলাম রাব্বানীর নেতৃত্বে প্রায় ১৫ জন তাঁকে (খাইরুলকে) মারধর করে টাকা ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন।
অভিযোগের বিষয়ে বক্তব্য জানার জন্য যুবলীগের সদস্য শামীম খন্দকারের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলে তাঁর নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। তবে এ বিষয়ে পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সদস্য স্বপন মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ‘ওই সাংবাদিক মিথ্যা কথা বলতেছেন। তাঁর সঙ্গে কোনো কথাই হয়নি। তাঁকে মারধরও করা হয়নি। এসবের সঙ্গে আমাকে অযথা জড়ানো হচ্ছে।’
বকশীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোহেল রানা বলেন, এ ঘটনায় উভয় পক্ষই থানায় অভিযোগ দিয়েছে। অভিযোগ দুটি তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।