লালমনিরহাটে বিএনপির ডাকা হরতাল চলাকালে জেলা বিএনপির কার্যালয়, দলের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদকের বাসভবন ও শ্রমিক দলের কার্যালয়ে হামলা, ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে।
আজ রোববার বিকেলে একে একে শহরের বিডিআর রোডের জেলা বিএনপির কার্যালয়, মিশন মোড় এলাকায় দলের রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব ওরফে দুলুর বাসভবন ও রেলস্টেশন রোডে শ্রমিক দলের কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।
এর আগে সকালে হরতাল চলাকালে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সংঘর্ষে জাহাঙ্গীর আলম (৪৮) নামের শ্রমিক ইউনিয়নের আহত এক নেতা মারা যান। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় দুপুরে তাঁর মৃত্যু হয়। নিহত জাহাঙ্গীর লালমনিরহাট সদর উপজেলা লোড-আনলোড শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, আজ বিকেলে একদল লোক লাঠিসোঁটা নিয়ে প্রথমে শহরের বিডিআর রোডে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সাইনবোর্ড ও ব্যানার ভাঙচুর করেন। পরে তাঁরা শহরের মিশন মোড় এলাকায় আসাদুল হাবিবের বাসভবনের ফটক ভেঙে আসবাব ভাঙচুর করে আগুন লাগিয়ে দেন। পরে দলবল নিয়ে তাঁরা শহরের রেলস্টেশন রোডে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দলের কার্যালয়ে গিয়ে দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করেন এবং আসবাব ভাঙচুর করে আগুন দেন। এ সময় বিএনপির কোনো নেতা-কর্মী সেখানে উপস্থিত ছিলেন না।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মো. হাফিজুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, আওয়ামী লীগ ‘শান্তি’ সমাবেশের নামে সারা শহরে অশান্তি সৃষ্টি করেছে। দলটির নেতা-কর্মীরা দলবল নিয়ে বিএনপির তিনটি স্থাপনায় হামলা ও ভাঙচুর চালিয়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছেন।
তবে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মতিয়ার রহমান অভিযোগ অস্বীকার করে প্রথম আলোকে বলেন, বিএনপির অভিযোগ সত্য নয়। মহেন্দ্রনগর বাজারে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতা জাহাঙ্গীর আলমকে কুপিয়ে হত্যা করে বিএনপির সন্ত্রাসীরা। সেখান থেকে দৃষ্টি অন্যদিকে সরাতে নিজেরাই নিজেদের স্থাপনায় ক্ষতি করে তারা আওয়ামী লীগকে দোষারোপ করছে। তিনি বলেন, কাউকে ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করতে দেওয়া হবে না।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ওমর ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, শহরের বিএনপির কয়েকটি স্থাপনায় হামলা ও অগ্নিসংযোগের সময় ঘটনাস্থলে পুলিশ ছিল না। খবর পেয়ে লালমনিরহাট ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আগুন নিভিয়ে ফেলেন। হামলার পর শহরে পুলিশের টহল জোরদার করা হয়েছে।