জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ব্যবহৃত দুখু মিয়া বাংলো
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ব্যবহৃত দুখু মিয়া বাংলো

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসির বাংলোয় ওএমআর শিট পাওয়ার ঘটনায় তদন্ত কমিটি

জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য সাবেক উপাচার্য সৌমিত্র শেখরের ব্যবহৃত বাংলোর শয়নকক্ষে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষার অব্যবহৃত ওএমআর শিট (উত্তরপত্র) ও অন্যান্য কাগজপত্র পাওয়ার ঘটনা তদন্তে কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে পাঁচ সদস্যের এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

গত সোমবার প্রথম আলো অনলাইনে ‘সৌমিত্র শেখরের দুখু মিয়া বাংলোয় ভর্তি পরীক্ষার ওএমআর, এমপির ডিও’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়। এ ঘটনায় সমালোচনা শুরু হলে গতকাল তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন। বিজ্ঞান ও প্রকৌশল অনুষদের ডিন অধ্যাপক এ এইচ এম কামালকে আহ্বায়ক, প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমানকে সদস্যসচিব করে গঠিত কমিটিকে আগামী ৩০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মো. মিজানুর রহমান আজ বুধবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পরবর্তী পদক্ষেপ নেবে।

এর আগে গত রোববার পৃথক আরেকটি তদন্ত কমিটি হয়। বিগত সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে হওয়া বিভিন্ন ঘটনা ও অনিয়ম নিয়ে সত্যানুসন্ধানে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ওই কমিটিকে ৬০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছিল।

ময়মনসিংহের ত্রিশালে অবস্থিত নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের ষষ্ঠ উপাচার্য হিসেবে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর যোগদান করেন অধ্যাপক সৌমিত্র শেখর। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পরই নানা অনিয়মে জড়িয়ে পড়েন বলে অভিযোগ আছে। গত ১৮ সেপ্টেম্বর এসব অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। দুদকের তথ্য অনুযায়ী, উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে সৌমিত্র শেখর ক্ষমতার অপব্যবহার করে অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে অঢেল সম্পদের মালিক হয়েছেন। তিনি ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুচ্ছ ভর্তিপ্রক্রিয়ায় ভর্তি-বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগও আছে তাঁর বিরুদ্ধে। অবৈধ অর্থে শেরপুরে জমি কিনে ডুপ্লেক্স বাড়ি তৈরি করার অভিযোগ পেয়েছে দুদক। তাঁর বিরুদ্ধে ঢাকার ধানমন্ডি ও উত্তরায় একাধিক ফ্ল্যাটের মালিকানা এবং শেরপুরে সম্পত্তির তথ্য পেয়েছে দুদক।

দুখু মিয়া নামের এই বাংলো থেকেই গুচ্ছ পদ্ধতির ২২টি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থী ভর্তিতে অনিয়ম হতো বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষকেরা। ২০২২, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা সাবেক উপাচার্যের সময় হয়। তবে ২০২৪ সালের ভর্তিপ্রক্রিয়া এখনো শেষ হয়নি। ২০২৩ সালের ১৮ জানুয়ারি গুচ্ছভুক্ত কবি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শূন্য আসনে ভর্তির ফলে অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিক্ষোভও করেন শিক্ষার্থীরা। মেধাতালিকায় পেছনে থাকা অনেকেই ভর্তির জন্য বিবেচিত হলেও সামনে থেকে অনেকে ভর্তির সুযোগ পাননি বলে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান ভর্তি-ইচ্ছুক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকেরা।