ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়

উপাচার্যের ‘কণ্ঠসদৃশ’ অডিও ক্লিপ মাইকে বাজল উচ্চ স্বরে, বিক্ষোভ অব্যাহত

উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের ‘কণ্ঠসদৃশ’ কথোপকথনের অডিও ক্লিপ মাইকে বাজানো হয়। আজ সকালে ১০টার দিকে কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে
ছবি: প্রথম আলো

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের ‘কণ্ঠসদৃশ’ কথোপকথনের অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর এবার সেই অডিও ক্লিপ মাইকে উচ্চ স্বরে বাজানো হয়েছে। আজ বুধবার সকাল ৯টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের সামনে পতাকার স্ট্যান্ডের পাশে এটি বাজানো হয়।

একই সময়ে ‘অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ’-এর ব্যানারে প্রশাসনিক ভবনের দোতলায় উপাচার্যের কার্যালয়ের কলাপসিবল গেটের সামনে বিক্ষোভ করতে থাকেন অস্থায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। তাঁরা উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দেন এবং উপাচার্য শেখ আবদুস সালামকে ‘দুর্নীতিবাজ’ আখ্যা দিয়ে দ্রুত অপসারণ দাবি করেন। তবে মাইকে উচ্চ স্বরে অডিও ক্লিপ বাজানোর বিষয়ে জানেন না বলে জানিয়েছেন আন্দোলনকারীরা।

অডিও ক্লিপটি মাইকে উচ্চ স্বরে বাজতে থাকা অবস্থায় সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ঘটনাস্থলে আসেন প্রক্টর শাহাদাৎ হোসেন। মাইকটি কারা বাজাচ্ছিলেন, তিনি তা জানার চেষ্টা করছিলেন। তবে এ সময় মাইকের আশপাশে কাউকে দেখা যায়নি। একপর্যায়ে প্রক্টর শাহাদাৎ হোসেন মাইকের প্রচার বন্ধ করে দেন। শাহাদাৎ হোসেন বলেন, দ্রুত এটি এখান থেকে না সরালে থানায় নেওয়া হবে।

ক্যাম্পাস বেশ উত্তপ্ত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্যাম্পাস ও আশপাশ এলাকায় অনেক পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।

‘অস্থায়ী চাকরিজীবী পরিষদ’-এর সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, কে বা কারা মাইকে অডিও ক্লিপ বাজিয়েছে, তা তাঁদের জানা নেই। তবে তাঁরা উপাচার্যের অপসারণ দাবিতে আন্দোলনে ব্যস্ত আছেন।

এদিকে কয়েক দিন ধরে উপাচার্য শেখ আবদুস সালামের কার্যালয়ে তালা ঝুলছে। তিনি ক্যাম্পাসের ভেতরে বাসাতেই থাকছেন। সেখান থেকেই প্রয়োজনে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের ডেকে কার্য সম্পাদন করছেন। গত সোমবার সকালে উপাচার্যের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে বিক্ষোভ করেন বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক নেতা-কর্মীরা। তাঁরা সেখানে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যবিরোধী স্লোগান দেন। এ সময় বিক্ষোভকারী ব্যক্তিরা উপাচার্যের অপসারণ দাবি করেন এবং তাঁকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেন।

কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ের সামনে ব্যানার টাঙিয়ে বিক্ষোভ করা হয়। আজ বেলা ১টার দিকে

গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দিনের বিভিন্ন সময় ‘ফারাহ জেবিন’ নামের একটি ফেসবুক আইডি থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের ‘কণ্ঠসদৃশ’ কথোপকথনের তিনটি অডিও ক্লিপ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পোস্টের ক্যাপশনে পোস্টদাতা লিখেছেন, ‘গত ২৫ অক্টোবর ২০২২ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের নিয়োগের লিখিত পরীক্ষায় তাঁর পছন্দের প্রার্থী অলিউর রহমান অলিকে নিয়োগ দিতে ব্যর্থ হওয়ায় পুনর্বিজ্ঞপ্তি দিয়ে সেই প্রার্থীকে আবার নিয়োগ দেওয়ার জন্য প্রশ্ন সরবরাহ করছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি প্রফেসর ড. শেখ আবদুস সালাম।’

এ ঘটনায় থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে সোমবার ক্যাম্পাসের বাংলোতে বসেই সারা দিন অফিস করেন উপাচার্য। বিভিন্ন সময়ে সেখানেই প্রক্টরসহ শিক্ষকদের ডেকে সভা করেন। এর মধ্যে দুপুরে ডিভাইসের খোঁজে আধা ঘণ্টার জন্য কার্যালয় খোলা হয়। তল্লাশি শেষে আবার তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। রাতে ব্যাপক পুলিশের উপস্থিতিতে কড়া নিরাপত্তায় ক্যাম্পাসে শহীদ মিনারে ফুল দেন উপাচার্য। এরপরই তিনি বাংলোতে চলে যান।