■ আগামী ২ নভেম্বর সুতারপাড়া, মাহমুদপুর ও রাইপাড়া ইউপি নির্বাচন।
■ সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতার কারণে প্রায় ২০ বছর নির্বাচন বন্ধ ছিল।
ঢাকার দোহার উপজেলার সুতারপাড়া, রাইপাড়া ও মাহমুদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থীরা আচরণবিধি মানছেন না বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। কর্মী–সমর্থকদের মারধর ও প্রচারে বাধা পেয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের বিরুদ্ধে নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন একাধিক প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী।
আগামী ২ নভেম্বর সুতারপাড়া, মাহমুদপুর ও রাইপাড়া ইউপি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। দোহার পৌরসভার সীমানা নির্ধারণ নিয়ে জটিলতার কারণে প্রায় ২০ বছর ধরে নির্বাচন বন্ধ ছিল।
ির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থীরা বলছেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থীদের কর্মীরা এলাকায় মোটরসাইকেল নিয়ে দফায় দফায় মহড়া দিয়ে বেড়াচ্ছেন। স্বতন্ত্র প্রার্থীদের কর্মীদের প্রচারের সময় প্রায়ই বাধা দিচ্ছেন, এমনকি মারধরও করছেন।
জানতে চাইলে দোহার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও ইউপি নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোবাশ্বের আলম বলেন, বেশ কয়েকটি অভিযোগ তাঁরা পেয়েছেন। অভিযোগ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সেগুলো তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছেন।
মাহমুদপুর ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা আইয়ুব আলী। তাঁর বিপরীতে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম ফারুকউজ্জামানসহ (আনারস) চারজন। ফারুকউজ্জামান অভিযোগ করেন, গত বুধবার নির্বাচনী প্রচার চালানোর সময় তাঁর সমর্থকদের বাধা দেন নৌকা প্রতীকের প্রার্থীর সমর্থকেরা। এরপর মারধর করা হয়। হামজাবাড়ির মোড় এলাকায় তোফাজ্জল হোসেন (৪০) নামের তাঁর এক কর্মীকে মারধর করা হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় তাঁর নির্বাচনী ব্যানার ও পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছে। তাঁর কর্মীরা পথে নামলেই বাধা দিচ্ছে ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।
ফারুকউজ্জামান আরও বলেন, আইয়ুব আলী তাঁর লোকজন নিয়ে প্রতিদিন সকাল–সন্ধ্যা মোটরসাইকেল নিয়ে এলাকায় মহড়া দিচ্ছেন। তিনি স্পষ্টভাবে নির্বাচনী আচরণবিধি ভঙ্গ করছেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে একাধিকবার লিখিত অভিযোগ এবং থানায় সাধারণ অভিযোগ দিয়েছেন। কিন্তু অভিযুক্তের বিরুদ্ধে এখনো কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
অভিযোগের বিষয়ে আইয়ুব আলী বলেন, তোফাজ্জল বিএনপির লোক। তিনি বিভিন্ন ধরনের অপরাধের সঙ্গে যুক্ত। তবে তাঁর লোকজনকে কেউ মারধর করেনি। মোটরসাইকেল মহড়ার অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, তিনি কিছু কর্মীকে সঙ্গে করে মোটরসাইকেল নিয়ে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে জনসংযোগ চালিয়েছেন।
সুতারপাড়া ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে মোট প্রার্থী নয়জন। স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী মেহেদী হাসান (টেলিফোন) বলেন, নৌকা প্রতীকের চেয়ারম্যান প্রার্থী শেখ নাসির উদ্দিন ৯টি ওয়ার্ডে নির্দেশনা অমান্য করে অধিক নির্বাচনী ক্যাম্প পরিচালনা করছেন। তাঁর লোকজন প্রতিদ্বন্দ্বী চেয়ারম্যান প্রার্থীদের পোস্টার ও ব্যানার ছিঁড়ে ফেলছেন। তাঁরা প্রতিনিয়ত লোকজনকে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন।
অভিযোগের বিষয়ে শেখ নাসির উদ্দিনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
রাইপাড়ায় চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী পাঁচজন। ইউপি নির্বাচনে স্বতন্ত্র চেয়ারম্যান প্রার্থী (আনারস) মোহাম্মদ আলী হোসেন বলেন, নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আমজাদ হোসেনের লোকজন তাঁরা সমর্থকদের হুমকি দিয়ে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে নির্বাচনী প্রচার–প্রচারণায় বাধা দিচ্ছেন। এ বিষয়ে নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসনের সহায়তা কামনা করছেন তিনি।
অভিযোগের বিষয়ে আমজাদ হোসেন বলেন, ‘আমার জনপ্রিয়তার কারণে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়ে গুজব ছড়াচ্ছেন।’
উপজেলার নির্বাচন কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, মাহমুদপুর ইউপি নির্বাচনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আইয়ুব আলীকে ডেকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। কোনো প্রার্থীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ তদন্ত সাপেক্ষে প্রমাণিত হলে তাঁর বিরুদ্ধে নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।