বড়াইগ্রামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছেড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলে যেতে চাইলে সংসদ সদস্য, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টরা তাঁদের বুঝিয়ে আবার ফেরত আনেন। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে
বড়াইগ্রামে সংবর্ধনা অনুষ্ঠান ছেড়ে বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলে যেতে চাইলে সংসদ সদস্য, ইউএনওসহ সংশ্লিষ্টরা তাঁদের বুঝিয়ে আবার ফেরত আনেন। মঙ্গলবার উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে

বড়াইগ্রামে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে হট্টগোল, বিক্ষোভ

সংবর্ধনার স্থান ও ক্রেস্ট নিয়ে বিতর্কের জেরে নাটোরের বড়াইগ্রামে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে হট্টগোল ও বিক্ষোভের ঘটনা ঘটেছে।

আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে সংসদ সদস্য ও প্রশাসনের অনুরোধে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়।

প্রশাসন ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ উপজেলা পরিষদ চত্বরে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবসের মূল অনুষ্ঠানের আয়োজন করে উপজেলা প্রশাসন। পূর্বনির্ধারিত সূচি অনুযায়ী বেলা ১১টায় সংবর্ধনার জন্য পরিষদের মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ডাকা হয়। কিন্তু বীর মুক্তিযোদ্ধারা মিলনায়তনে সংবর্ধনা নেবেন না জানিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকেন। একপর্যায়ে হট্টগোল শুরু হয়। তাঁরা দল বেঁধে অনুষ্ঠানস্থল ছেড়ে চলে যেতে থাকেন।

এ সময় উপস্থিত সাংবাদিকদের কাছে বীর মুক্তিযোদ্ধারা অভিযোগ করেন, মূল অনুষ্ঠানে তাঁদের সংবর্ধনা না দিয়ে ঘরের মধ্যে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। অনুষ্ঠান উপলক্ষে কর্মকর্তাদের ক্রেস্ট দিলেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের দেওয়া হচ্ছে না। অনুষ্ঠানের পতাকা উত্তোলন পর্বেও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের কোনো প্রতিনিধিত্ব ছিল না।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, বীর মুক্তিযোদ্ধারা চলে যেতে থাকলে স্থানীয় সংসদ সদস্য সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস, সহকারী কমিশনার (ভূমি) বোরহান উদ্দিন মিঠু ও বড়াইগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শফিউল আযম মঞ্চ থেকে উঠে আসেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিনয়ের সঙ্গে শান্ত করার চেষ্টা করেন। প্রায় ১৫ মিনিট পর বীর মুক্তিযোদ্ধারা আবার সংবর্ধনাস্থলে যান এবং সম্মাননা গ্রহণ করেন।

নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ফিরিয়ে এনে ফুলেল সংবর্ধনা দেওয়া হয়

বড়াইগ্রাম উপজেলার সাবেক কমান্ডার মাধাইমুড়ি গ্রামের শামসুল আলম বলেন, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে করা অনুষ্ঠানে মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান জানানোর যথাযথ ব্যবস্থা করা হয়নি। অনুষ্ঠানে তাঁদের কোনো প্রতিনিধি রাখা হয়নি। বনপাড়া বাজার এলাকার বীর মুক্তিযোদ্ধা মসলেম উদ্দিন বলেন, উন্মুক্ত মাঠে সব অনুষ্ঠান হলেও তাঁদের অন্দর মহলে নিয়ে সংবর্ধনার আয়োজন করা হয়েছে। এটা মুক্তিযোদ্ধাদের ভালো লাগেনি।

জানতে চাইলে ইউএনও লায়লা জান্নাতুল ফেরদৌস বলেন, তিনি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বড়াইগ্রামে যোগদান করেছেন। সময় স্বল্পতার কারণে সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে আলোচনা করতে পারেননি। সম্মানিত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানটি সুন্দরভাবে করতে মিলনায়তনে আয়োজন করা হয়েছিল। এটা নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি হয়। ক্রেস্টের বিষয়ে বলেন, অনুষ্ঠানে সব মুক্তিযোদ্ধার সম্মানে একটি ক্রেস্ট তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। সেটি মুক্তিযোদ্ধা কার্যালয়ে সংরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়া একজন কমান্ডারকে অতিথি হিসেবে ক্রেস্ট দেওয়া হয়েছে।

প্রতিনিধিত্ব না থাকার বিষয়ে ইউএনও বলেন, সরকারি নির্দেশনা অনুসরণ করেই অনুষ্ঠান সাজানো হয়েছে। তবুও ভুলত্রুটি হলে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখার জন্য বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি অনুরোধ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই অনুষ্ঠান করা হবে।