নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় স্থানীয় হাজামের (খতনাকারী) মাধ্যমে এক শিশুর (৭) সুন্নতে খতনা করার সময় শিশুটি গুরুতর জখম হয়েছে। হাজাম শিশুটির জননাঙ্গের সামনের অংশ কেটে ফেলেছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে উপজেলার নদনা ইউনিয়নের বুরপিট গ্রামের একটি বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে।
এ ঘটনায় গুরুতর আহত শিশুটিকে তাৎক্ষণিক নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে কেটে ফেলা অংশসহ শিশুটিকে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
এ ঘটনায় জড়িত হাজামকে তাৎক্ষণিক আটক করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁর নাম মো. মামুন। তিনি সদর উপজেলার দাদপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা। সন্ধ্যায় তাঁকে সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। তাঁর বিরুদ্ধে থানায় নিয়মিত মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা বখতিয়ার উদ্দিন চৌধুরী। আজ রাত সাড়ে নয়টায় প্রথম আলোকে তিনি জানান, আটক হাজাম মামুনকে আগামীকাল শুক্রবার নোয়াখালীর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হবে।
পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আজ বিকেলের দিকে ওই শিশুকে খতনা করাতে আসেন হাজাম মামুন। তিনি খতনা করানোর সময় শিশুটির জননাঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া কাটতে (সারকামসিশন) গিয়ে পুরুষাঙ্গের মাথার অংশ কেটে ফেলেন। এ সময় মামুন পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে ধরে ফেলেন। পরে সন্ধ্যায় তাঁকে সোনাইমুড়ী থানায় সোপর্দ করা হয়।
শিশুটির পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার পর রক্তাক্ত অবস্থায় তাঁরা শিশুটিকে প্রথম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখান থেকে তাকে জেলা সদরের নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসক শিশুটিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে জননাঙ্গের কাটা অংশসহ উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন।
২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তানভীর হায়দার ইমন বলেন, হাজাম খতনা করতে গিয়ে ওই শিশুর জননাঙ্গের সামনের অংশ কেটে ফেলেছেন। অবশ্য রোগীর স্বজনেরা বুদ্ধি করে জননাঙ্গের কেটে ফেলা অংশসহ শিশুটিকে হাসপাতালে নিয়ে আসেন। এখানে জননাঙ্গের কাটা অংশ ‘ফ্রিজআপ’ করে রোগীর স্বজনদের বুঝিয়ে দিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু সার্জারি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।