পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা

ক্যামেরায় ৩ কিলোমিটার এলাকার যানবাহন নজরদারিতে থাকবে

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের টোলপ্লাজায় নজরদারি বাড়ানোর জন্য বসানো হয়েছে অত্যাধুনিক ক্যামেরা
ছবি: সংগৃহীত

পদ্মা সেতুর দুই প্রান্তের টোল প্লাজা ও টোল প্লাজার সড়কে নজরদারি বাড়াতে দুটি অত্যাধুনিক পিটিজেড (প্যান-টিল্ট জুম ক্যামেরা) ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ওই ক্যামেরা চারদিকে সমানভাবে ঘুরে ভিডিও ধারণ করবে। ওই ক্যামেরার সাহায্যে টোল প্লাজার সামনের সড়কের অন্তত তিন কিলোমিটার এলাকার যানবাহন নজরদারিতে রাখা হবে। এ ছাড়া টোল প্লাজার ভেতরের কর্মকাণ্ড নজরদারিতে রাখার জন্য ৩৪টি সাধারণ সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে।

বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ সূত্র জানায়, গত ২৫ জুন পদ্মা সেতুর উদ্বোধন করা হয়। তার পরদিন থেকে যানবাহন নিয়ে মানুষ সেতু পারাপার হচ্ছে। গড়ে প্রতিদিন ১৫ হাজার থেকে ১৬ হাজার যানবাহন সেতু পারাপার হচ্ছে। যানবাহনের টোল আদায় করার জন্য টোল প্লাজার ছয়টি করে বুথ সক্রিয় রাখা হয়েছে। কিন্তু ১৫-১৬ হাজার যানবাহনের আসা-যাওয়া নজরদারি করার জন্য কোনো সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো ছিল না।

গত দেড় মাসে জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় ব্যারিয়ার ও টোল বুথে কয়েক দফা ধাক্কা দেয় বাস ও ট্রাক। জাজিরা প্রান্তের টোল প্লাজার সামনে দুর্ঘটনায় এক যাত্রীর মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে। পদ্মা সেতুর ওপরে দুটি দুর্ঘটনায় চার ব্যক্তি প্রাণ হারিয়েছেন। কয়েক দফা ট্রাক ও বাস উল্টে যাওয়ার ঘটনাও ঘটেছে। যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পেলে প্রায়ই টোল প্লাজার সামনের সড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়।

পদ্মা সেতু এলাকায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সেই দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, সেটিও সহজেই শনাক্ত করতে পারবে এই ক্যামেরা।

এমন পরিস্থিতিতে টোল প্লাজা ও তার সামনের সড়কে নজরদারি বাড়ানোর উদ্যোগ নেয় বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ। পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশন ৯ আগস্ট জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তের টোল প্লাজায় ১৭টি করে ৩৪টি সিসি ক্যামেরা বসায়। এ ছাড়া দুই প্রান্তের টোল প্লাজায় দুটি অত্যাধুনিক পিটিজেড ক্যামেরা বসানো হয়েছে। ওই ক্যামেরা চারদিকে সমানভাবে ঘুরবে। সোজা সড়কে ৩ কিলোমিটার পর্যন্ত যানবাহন নজরদারিতে রাখা যাবে। আর সড়ক বাঁকা হলে এক কিলোমিটার এলাকার চারদিকের পরিষ্কার ভিডিও চিত্র সংরক্ষণ করবে।

পদ্মা সেতুর টোলপ্লাজায় বসানো হয়েছে ক্যামেরা

পদ্মা সেতুর টোল আদায়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কোরিয়ান এক্সপ্রেসওয়ে করপোরেশনের টোল সংরক্ষণপদ্ধতির প্রকৌশলী আহম্মেদ জিবুল প্রথম আলোকে বলেন, টোল প্লাজা এলাকায় নজরদারি ও অধিকতর নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বসানো হয়েছে পিটিজেড ক্যামেরা। এ ছাড়া সেতুর জাজিরা ও মাওয়া প্রান্তে আরও ৩৪টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। পদ্মা সেতু এলাকায় কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঘটলে সহজেই ক্যামেরায় তা ধরা পড়বে। পদ্মা সেতু এলাকায় বিভিন্ন সময় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। সেই দুর্ঘটনা কীভাবে ঘটেছে, সেটিও সহজেই শনাক্ত করতে পারবে এই ক্যামেরা। এটা বসানোর কারণে পদ্মা সেতুর টোল প্লাজা এলাকা আগের চেয়ে বেশি নিরাপদ হয়েছে।

সেতু কর্তৃপক্ষের সহকারী প্রকৌশলী পার্থ সারথি বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, সেতুতে সার্ভিল্যান্স সিস্টেমের ক্যামেরা বসানোর কাজ চলছে। তা আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে চালু করা হবে। ওই ক্যামেরা দিয়ে সেতুর ওপর, নিচ ও চারদিক নজরদারিতে রাখা হবে। আর এখন টোল সিস্টেমের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান টোল প্লাজার কর্মকাণ্ড ও সড়কের যানবাহন নজরদারিতে রাখার জন্য সিসি ক্যামেরা বসিয়েছে।