শরীয়তপুরের ডামুড্যায় জমিজমা নিয়ে বিরোধের জেরে সিরাজুল ইসলাম মাঝি (৬৫) নামের এক জামায়াত নেতাকে হত্যার অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার সিড্যা ইউনিয়নের মধ্য সিড্যা এলাকায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে ভাতিজা জাহাঙ্গীর মাঝির ছেলে শরীফ মাঝি পিটিয়ে সিরাজুলকে হত্যা করেন বলে তাঁর পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেছেন।
নিহত সিরাজুল ইসলাম মাঝি জামায়াতে ইসলামীর সিড্যা ইউনিয়ন কমিটির বায়তুল মাল সম্পাদক (অর্থ সম্পাদক) ছিলেন। তিনি ওই ইউনিয়নের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্য সিড্যা এলাকার মৃত নুরু বক্স মাঝির ছেলে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে সিরাজুল ইসলাম মাঝির সঙ্গে তাঁর আপন ভাতিজা জাহাঙ্গীর মাঝির দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। আজ সকালে বিরোধপূর্ণ জমি নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। পরে তা মারামারিতে রূপ নেয়। এ সময় সিরাজুল ইসলামের লোকজন জাহাঙ্গীরের ছেলে শরীফ মাঝিকে আঘাত করেন। ক্ষুব্ধ শরীফ তাঁর দাদা সিরাজুল ইসলামকে সজোরে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। পরে রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটান। এতে তিনি অচেতন হয়ে পড়েন। স্বজনেরা দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠিয়েছে।
নিহত সিরাজুল ইসলামের মেয়ে সামিয়া আক্তার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, ‘ওরা অনেক বছর ধরে আমাদের জমি দখল করে রেখেছিল। স্থানীয় সালিসকারীরা কাগজপত্র অনুযায়ী জমি ভাগ করে দিয়েছে। আমার বাবা দখল করা ওই জমি উদ্ধার করতে গেলে শরিফ মাঝি তেড়ে আসে। প্রথমে রড দিয়ে পিটিয়ে আমার মাকে পাশের একটি ছোট খালে ফেলে দেয়। এরপর আমার বাবাকে রড দিয়ে পিটিয়ে ফেলে রাখে। এরপর মোটরসাইকেল চালিয়ে পালিয়ে যায়। আমি আমার বাবা হত্যার বিচার চাই।’
ঘটনার পর শরীফ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছেন। তাঁদের মুঠোফোনও বন্ধ থাকায় জামায়াত নেতা সিরাজুল ইসলামকে হত্যা করার অভিযোগের বিষয়ে তাঁর বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
ডামুড্যা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাফিজুর রহমান মানিক প্রথম আলোকে বলেন, হাসপাতাল থেকে মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠানো হয়েছে। এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি। মামলা হলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।