গোপালগঞ্জের কাশিয়ানীতে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাম্মেল হোসেনের বসতবাড়ি ভাঙচুর ও হামলার চালানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। আজ শুক্রবার সকাল ১০টায় বীর মুক্তিযোদ্ধার ভাতিজা ও পারুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি কামরুল হাসান বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করে এসব অভিযোগ করেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে আওয়ামী লীগ নেতা কামরুল হাসান বলেন, ‘গত ২৫ এপ্রিল জাঙ্গালিয়া গ্রামে আমার চাচাতো ভাই আলম মোল্যার বাড়িতে আমার ছোট চাচা আনোয়ার হোসেন লোকজন নিয়ে জমি মাপার বিষয় কথা বলছিলেন। এ সময় একই গ্রামের জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর ভাই রেজাউল করিম লোকজন নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। তাঁরা জমি মাপামাপির বিষয়টি নিয়ে আমার চাচার সঙ্গে উগ্র ভাষায় কথা বলতে থাকেন। তাঁরা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইছে বুঝতে পেরে আমার চাচা সেখান থেকে চলে যান। খবর পেয়ে আমি এবং ইউপি সদস্য নজরুল ইসলাম ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিবেশ স্বাভাবিক করে চলে আসছিলাম। কিন্তু পথে পূর্বপরিকল্পিতভাবে পেছন থেকে জাহাঙ্গীর আলম আমাকে ডাক দেন। একপর্যায়ে তাঁরা সংঘবদ্ধ হয়ে রামদা, রড ও হাতুড়ি নিয়ে আমার ওপর অতর্কিত হামলা চালান।’
সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘জাহাঙ্গীর আলম ও তাঁর সহযোগীরা শুধু হামলা চালিয়ে ক্ষান্ত হননি, তাঁরা আমার চাচা বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাম্মেল হোসেন ও আমাদের বাড়িসহ তিনটি বসতবাড়ি ভাঙচুর করেন। খবর পেয়ে কাশিয়ানী থানা–পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে তাঁদের বাধা দিলে তাঁরা পুলিশের ওপর চড়াও হন। এ কারণে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিরা উল্টো আমার লোকজনের বিরুদ্ধে মামলা করে হয়রানি করছেন।’
কামরুল হাসান আরও বলেন, ‘২৮ এপ্রিল আমাকে ও আমার চাচাতো ভাই পুলিশ কর্মকর্তা মাঈনুল হাসান এবং আমার লোকজনের বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীর আলমরা সংবাদ সম্মেলন করেছেন। ওই সংবাদ সম্মেলনে যেসব তথ্য উপস্থাপন করা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। ঘটনা আড়াল করতে আমাকে ও আমার চাচাতো ভাই এবং থানা–পুলিশকে দোষারোপ করা হচ্ছে। আমার চাচাতো ভাই এলাকার কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নন।’
ওই সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মোসলেম মোল্যা, আকরামুজ্জামান, আনোয়ার হোসেন, আশরাফ মোল্যা, সায়েত মোল্যা, জামাল হোসেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মোকাম্মেল হোসেন প্রমুখ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জাহাঙ্গীর আলম কালুর বাবা আবুল হাশেম প্রথম আলেকে বলেন, ‘গত পরুলিয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে তাদের পক্ষে কাজ না করায় নির্বাচনের পর থেকে তাঁরা (কামরুল হাসান ও তাঁর সমর্থকেরা) আমাদের নানাভাবে হয়রানি ও মারধর করে আসছে। এ ছাড়া তাদের বংশে একজন পুলিশ কর্মকর্তা আছেন, তাঁর ক্ষমতার দাপটে এলাকায় অপকর্ম করে বেড়াচ্ছেন তাঁরা। তাঁরা যে অপবাদ দিচ্ছেন, এটা সত্য নয়। তাঁরাও আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করেন আসছেন।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে কাশিয়ানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মুহাম্মদ ফিরোজ আলম বলেন, তুচ্ছ ঘটনায় আবুল হাশেমের পক্ষের সঙ্গে মো. কামরুল হাসান পক্ষের সংঘর্ষ হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনার চেষ্টা করলে আবুল হাশেমের লোকজন পুলিশের ওপর হামলা করে। এতে পাঁচ পুলিশ সদস্য আহত হয়। এ ঘটনায় পৃথক তিনটি মামলা হয়েছে। ওই তিন মামলায় এজাহার ভুক্ত ছয়-সাতজন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।