‘পাওনা টাকা চাওয়ায়’ গলা কেটে হত্যার চেষ্টা, বৃদ্ধ দোকানি আইসিইউতে

পাওনা টাকা চাওয়ায় দোকানে ঢুকে রাজা মিয়াকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপান যুবক সাইদুল। আজ সকালে মিরসরাই পৌরসভার মধ্যম মঘাদিয়া এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলায় বকেয়া টাকা চাওয়ায় রাজা মিয়া (৬৫) নামের এক মুদিদোকানিকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ পাওয়া গেছে এক যুবকের বিরুদ্ধে। আজ রোববার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মিরসরাই পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম মঘাদিয়ায় এ ঘটনা ঘটে। এ সময় দোকানের পাশে থাকা এক কিশোর ও অপর এক ব্যক্তিকেও কুপিয়ে জখম করেন ওই যুবক।

আহত রাজা মিয়া মিরসরাই পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মধ্যম মঘাদিয়া এলাকার বাসিন্দা। ঘটনার পর স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় সাইদুল ইসলাম (২৮) নামের ওই যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সাইদুল একই এলাকার শামসুল আলমের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি সংস্থায় অফিস সহায়কের কাজ করেন।

পুলিশ ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সাইদুল ইসলামের কাছে বকেয়ার আট হাজার টাকা পেতেন তাঁর বাড়ির পাশের মুদিদোকানদার রাজা মিয়া। গতকাল বিকেলে সাইদুল ইসলামকে তিনি টাকা পরিশোধ করতে বলেন। এরপর আজ সকালে দোকানে ঢুকে রাজা মিয়াকে ধারালো ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে শুরু করেন সাইদুল। নিজেকে বাঁচাতে রাজা মিয়া দৌড়ে দোকানের বাইরে চলে গেলে সেখানে জাপটে ধরে তাঁর গলায় ছুরি চালাতে যান সাইদুল। এ সময় পাশের এক দোকানি এসে সাইদুলের হাত ধরে ফেলেন। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় দোকানি রাজা মিয়াকে স্থানীয় ব্যক্তিরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। ঘটনার সময় সাইদুলের ছুরিকাঘাতে আবদুল্লা হাসিব (১৩) নামের এক কিশোর ও মো. ইউসুফ নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি আহত হন।

আহত রাজা মিয়ার ছোট ভাই শোকর আহম্মদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাওনা টাকা চাওয়ায় কোনোরকম বাগ্‌বিতণ্ডা ছাড়াই ঠান্ডা মাথায় আমার বড় ভাইকে কুপিয়ে ও গলা কেটে হত্যা করতে চেয়েছে সাইদুল ইসলাম। গলায় ও মাথায় গভীর ক্ষত হওয়ায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আমার ভাই এখন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) জীবন-মরণের সন্ধিক্ষণে আছেন।’

মিরসরাই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ফারজানা ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, আহত ব্যক্তির গলার বাঁ পাশে কাটার গভীর ক্ষত ছিল। বাঁ হাতের একটি আঙুল শরীর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়াসহ হাতের তালুতেও গভীর ক্ষত ছিল। ওই ব্যক্তির শরীরের পাঁচ জায়গায় ধারালো কিছুর আঘাতের চিহ্ন পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে গলায় ও বাঁ হাতের আঘাত গুরুতর ছিল। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অবস্থার অবনতি হতে থাকলে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। একই ঘটনায় আহত আরও দুজনকে এখানে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।

মিরসরাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কবির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ওই দোকানিকে গলা কেটে হত্যাচেষ্টার ঘটনায় স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতায় ঘটনাস্থল থেকে এক যুবককে আটক করা হয়েছে। তাঁর ব্যবহৃত রক্তমাখা একটি ধারালো ছুরিও উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিকেল পর্যন্ত থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ না পেলেও ঘটনাটির তদন্ত হচ্ছে।