টানা ১৮ দিনের ব্যবধানে চুয়াডাঙ্গায় আজ শুক্রবার প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে। আবারও তাপপ্রবাহ ফিরে আসায় গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা বলছেন, বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতির কারণে আর্দ্রতা বেড়ে যাওয়ায় এমন গরম অনুভূত হচ্ছে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার হাটকালুগঞ্জে অবস্থিত প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগার আজ সন্ধ্যা ছয়টায় জেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করেছে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এর আগে ৫ মে জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল ৪০ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী, ৩৬ থেকে ৩৭ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মৃদু তাপপ্রবাহ, ৩৮ থেকে ৩৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত মাঝারি তাপপ্রবাহ, ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত তীব্র তাপপ্রবাহ এবং ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে তাপমাত্রা রেকর্ড করা হলে তাকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ বলা হয়ে থাকে। সে হিসাবে আজ চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে।
আজ সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। তাই কর্মজীবী মানুষদের তেমন বাইরে বের হওয়া লাগেনি। তবে ভ্যাপসা গরমে বাড়িতে রান্নাবান্না ও গৃহস্থালির কাজ করতে গিয়ে নারীদের চরম অস্বস্তিতে পড়তে হয়। পৌর এলাকার মল্লিকপাড়ার বাসিন্দা জাহানারা বেগম বলেন, ‘গরমে মনে হচ্চে শরিলি আগুনির ছ্যাঁকা লাগজে। আকার (চুলো) পাড়ে যাওয়ায় যাচ্চে না। ছ্যান (গোসল) করার পরপরই গা ঘাইমে ভিজে চপচপে হয়ে যাচ্চে।’
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের রেকর্ড অনুযায়ী, মে মাসের ২৪ দিনের মধ্যে মাত্র ৯ দিন স্বাভাবিক তাপপ্রবাহ থাকলেও ১৫ দিনই ছিল মৃদু থেকে অতি তীব্র তাপপ্রবাহ। এ মাসে অন্তত পাঁচ দিন (১, ২, ৫, ১৭ ও ২১ মে) দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গা জেলায়।
আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের তথ্য পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জেলায় ১ মে এক দিন অতি তীব্র তাপপ্রবাহ (৪২ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস); ২, ৩, ৫ ও ২৪ মে চার দিন তীব্র তাপপ্রবাহ (৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৪১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস ); ৪, ১৭, ১৯ ও ২৩ মে চার দিন মাঝারি তাপপ্রবাহ (৩৮ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস থেকে ৩৯ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস) এবং ৬, ১৪, ১৫, ১৬, ২১ ও ২২ মে ছয় দিন মৃদু তাপপ্রবাহ (৩৬ দশমিক ২ থেকে ৩৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত) রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রথম শ্রেণির আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রাকিবুল হাসান জানান, দিনভর রোদ ও মেঘের আনাগোনা থাকলেও সাগরে নিম্নচাপের কারণে তাপমাত্রা বেড়ে গেছে এবং বাতাসে জলীয় বাষ্পের উপস্থিতির কারণে বেড়ে গেছে আর্দ্রতা। যে কারণে তাপমাত্রার চেয়েও অস্বাভাবিক গরম অনুভূত হচ্ছে।